এটিএম জালিয়াতির ঘটনায় সিটি ব্যাংক লিমিটেডের তিনজন কর্মকর্তার জড়িত থাকার বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া গেছে বলে সংসদে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
সোমবার (০২ মে) দশম জাতীয় সংসদের দশম অধিবেশনের ৬ষ্ঠ কার্যদিবসে টেবিলে উত্থাপিত অ্যাডভোকেট মো. রহমত আলীর লিখিত প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
অর্থমন্ত্রী বলেন, এটিএম জালিয়াতির সাথে দি সিটি ব্যাংক লিমিটেডের তিনজন কর্মকর্তার জড়িত থাকার বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কর্তৃক একটি তদন্ত প্রক্রিয়াধীন আছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক তদন্তকারী সংস্থাকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছে। এছাড়া দি সিটি ব্যাংক লিমিটেডের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা বিভাগ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। অভিযোগে দোষী প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে মর্মে ব্যাংকটি জানিয়েছে- যোগ করেন অর্থমন্ত্রী।
এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ব্যাংকসমূহের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং নির্দেশ যথাযথ পরিচালনার জন্য তদারকিও অব্যাহত রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এটিএম লেনদেন নিরাপদ ও ঝুঁকি মোকাবেলায় ব্যাংকগুলোর গৃহীত পদক্ষেপের অগ্রগতি জানতে ব্যাংকগুলোর সঙ্গে নিয়মিত সভা করা হচ্ছে। এছাড়াও এটিএম জালিয়াতি সংক্রান্ত সব অভিযোগ বাংলাদেশ ব্যাংক গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নিচ্ছে এবং প্রয়োজনে পদির্শন কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এম, আবদুল লতিফের অপর এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশ বৈদেশিক সহায়তা গ্রহণ করে আসছে। বৈদেশিক সহায়তা বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় অবকাঠামো ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচিতে ব্যবহার করা হয়েছে। এ ব্যয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে গুরুপ্তপূর্ণ অবদান রেখেছে।
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী বা সংস্থাসমূহের কাছ থেকে অফিসিয়াল ডেভলপমেন্ট অ্যাসিসট্যান্স (ওডিএ) গ্রহণ করে থাকে। যার প্রায় পুরোটাই নমনীয় ঋণ কিংবা অনুদান। ফলে স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন উৎস থেকে যে সব বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ করা হয়েছে তার গড় সুদের হার প্রায় ১ দশমিক ০০ শতাংশ। এ সব ঋণের গড় গ্রেস পিরিয়ড ৮ বছর এবং গড়ে ৩০ বছরে পরিশোধযোগ্য।
বাংলাদেশ সব সময়েই কঠিন শর্তের ঋণ গ্রহণকে নিরুসাৎহিত করে এবং অধিক হারে বৈদেশিক সহায়তা সংগ্রহের ক্ষেত্রে প্রধানত নমনীয় ঋণ গ্রহণকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকে।
তবে বৈদেশিক ঋণ যাতে আমাদের অর্থনীতির ওপর চাপ সৃষ্টি না করে, তা নিশ্চিত করতে কঠিন শর্তের (অনমনীয় ও বাণিজ্যিক) ঋণ গ্রহণ পরিহার করে নমনীয় ঋণ গ্রহণকে প্রাধান্য দিয়ে বৈদেশিক সহায়তা সংগ্রহের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী।
Discussion about this post