শিশু সৌরভকে গুলি করার ঘটনায় অভিযুক্ত গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে গাইবান্ধার অতিরিক্ত বিচারিক হাকিম ময়নুল হাসান ইউসুফের আদালতে এ সংক্রান্ত শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। আসামি পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবু।
এর আগে বুধবার (১৪ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১০টার দিকে রাজধানীর উত্তরায় এক আত্মীয়ের বাসা থেকে এমপি লিটনকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৬টায় ঢাকা থেকে তাকে নিয়ে গাইবান্ধায় পৌঁছায় ডিবি পুলিশের একটি দল। বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে তাকে আদালতে নেয়া হয়।
এদিকে আদালতে এমপি লিটনের শুনানিকে কেন্দ্র করে গাইবান্ধার আদালত এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে জেলা পুলিশ। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এমপি লিটনের সমর্থকরা। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ,টিয়ার শেল নিক্ষেপ ও ফাঁকা গুলি করে। তবে সংঘর্ষের ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, বুধবার দুপুরে এমপি লিটনের বিচারিক হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণ-সংক্রান্ত হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশনা স্থগিত করেন আপিল বিভাগের অবকাশকালীন বেঞ্চ। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে লিটনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এর আগে গত সোমবার হাইকোর্ট এমপি লিটনের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে তাঁকে ১৮ অক্টোবরের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের নির্দেশনা স্থগিত চেয়ে গত মঙ্গলবার আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন তা স্থগিতের আদেশ দেন।
১৩ দিন আগে গত ২ অক্টোবর ভোরে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্ধ ইউনিয়নের গোপালচরণ এলাকায় এমপি লিটনের ছোড়া গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত হন স্থানীয় গোপালচরণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিশু শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসেন সৌরভ (৮)। পরদিন আহত সৌরভের বাবা এমপি লিটনকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা করেন। শিশু সৌরভ এখনও রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এদিকে মনজুরুল ইসলাম লিটন গ্রেপ্তার হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। এমপি লিটনের গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়লে হাটবাজার ও চায়ের দোকানে উপস্থিত লোকজনের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা যায়। তারা এমপি লিটনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
Discussion about this post