গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনকে হাইকোর্টের দেওয়া ১৮ অক্টোবরের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালত। এর ফলে তাকে গ্রেফতারে আর কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
সোমবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে শিশু সৌরভের দুই পায়ে গুলি করার এমপি লিটনের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে তাকে আগামী ১৮ অক্টোবরের মধ্যে গাইবান্ধার বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর অবকাশকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) এ নির্দেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন জানান রাষ্ট্রপক্ষ। পুলিশ যেন তাকে গ্রেফতার করতে পারে, সেজন্য আপিল বিভাগে এ আবেদন জানানো হয়।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সেদিন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, হাইকোর্ট এমপি লিটনের জামিনের আবেদন খারিজ করেছেন। এরপর তিনি আত্মসমর্পণের সুযোগ চাওয়ায় তাকে ১৮ অক্টোবরের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন। এ আদেশের ফলে তাকে গ্রেফতার করা যাবে কি-না, সে বিষয়ে বিভ্রান্তিতে পড়েছে পুলিশ। তাই চেম্বার বিচারপতির আদালতে এ নির্দেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন জানাবো, যেন তাকে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেফতার করা যায়।
এ বিষয়ে আপিল বিভাগের আদেশ রয়েছে যে, জামিন না দিলে আসামিকে পুলিশ কাস্টডিতে পাঠাতে হবে বলেও উল্লেখ করেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
এর আগে শুনানিতেও জামিনের বিরোধিতা করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, একজন জনপ্রতিনিধি এ কাজ কিভাবে করেন? এমনকি এমপি অপরাধের বিরোধিতা করে কোনো বিবৃতিও দেননি। এছাড়া আপিল বিভাগের নির্দেশনা মতে তাকে আগাম জামিন দেওয়া যায় না। তাই তাকে এখন পুলিশ হেফাজতে তুলে দেওয়া উচিত।
গত ২ অক্টোবর ভোরে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্ধ ইউনিয়নের গোপালচরণ এলাকায় এমপি লিটনের ছোড়া গুলিতে দুই পায়ে গুলিবিদ্ধ হয় গোপালচরণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসেন সৌরভ (৮)।
পরদিন আহত শিশু সৌরভের বাবা এমপি লিটনকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন তিনি।
শিশুটি বর্তমানে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন।
রোববার (১১ অক্টোবর) হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন জানান এমপি লিটনের আইনজীবী এসএম আরিফুল ইসলাম।
সোমবার সকালে লিটনের করা আগাম জামিনের আবেদনের শুনানির সময় দুপুর একটায় তাকে আদালতে আসতে বলেন আদালত। পরে বেলা ১২টা ৫০ মিনিটে হাজির হন এমপি লিটন।
Discussion about this post