একে,এম নাজিম. হাটহাজারী চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ এশিয়ার বিখ্যাত মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে বাংলা চৈত্র মাসের শেষের দিকে অথবা বৈশাখ মাসের প্রথম সপ্তাহে ডিম দিতে পারে বলে মনে করছেন হালদার তীর বর্তী ডিম সংগ্রহ কারীরা। দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র চট্টগ্রামের হালদা নদী। এ নদীতে চৈত্র-বৈশাখ মাসে রুই, কাতলা মৃগেল ও কার্প জাতীয় মা মাছ ডিম ছাড়ে। চৈত্র মাসে হালদা নদীতে ছাড়া ডিম খুবই উৎকৃষ্ট। এ ডিমের পোনা দ্রুত বর্ধনশীল। বাংলা বছরের শেষ মাস থেকে বিশেষ করে ফাল্গুন মাসের শেষ দিকে সাংগু, মাতামুহুরী, কর্ণফুলীসহ বিভিন্ন শাখা নদী ও খাল থেকে মা মাছ হালদা নদীর মিষ্টি পানিতে চলে আসে। তবে সরকার এই হালদা নদীকে সুষ্ট রক্ষণা বেক্ষণ করলে ডিম সংগহ কারীর পাশা পাশি সরকারও লাভবান হবে বলে মনে করেণ সাধারণ মানুষ।
জানা যায়, প্রতি বছরের চৈত্র ও বৈশাখ মাসের শেষের দিকে এই নদীতে বিভিন্ন প্রজাতির মা মাছ ডিম দিয়ে থাকে। প্রকৃতিক আবাহাওয়া ভাল থাকলে মা মাছ যে কোন দিন যে কোন সময় ডিম ছাড়তে পারে। মুশলদারে বৃষ্টি আর মেঘের তীব্র গর্জন শুরু হলে মা মাছ ডিম ছেড়ে দিবে। ডিম সংগ্রহ কারীরা তাদের ডিম সংগ্রহের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিয়ে প্রাথমিক ভাবে প্রস্তুত রয়েছে। মৌসুমের পূর্ণিমার তিথিতে প্রথম দফা ডিম দিতে পারে বলে আশা করছে ডিম সংগ্রহকারীরা গত দুই এক দিনের বৃষ্টি আর মেঘের গর্জন দেখা দেওয়ায় ডিম সংগ্রহ কারীরা হালদায় ডিম ছাড়বে এমন আশংকায় হালদার দিকে কড়া নজর দিয়ে রাকছে অনেকেই। ইতি মধ্যে ডিম সংগ্রহ কারীরা জাল, নৌকা ও নঙ্গর নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে। গতকাল বিকালে এই প্রতিবেদক হালদা নদীর পারে গিয়ে হালদার তীর বর্তী বেশ কয়েক জন ডিম সংগ্রহ কারীর সাথে আলাপ করে জানা যায়, প্রাকৃতিক আবাহাওয়া ঠিক থাকলে এই মাসের যে কোন সময় হালদা নদীর মা মাছ ডিম ছাড়তে পারে। তবে মেঘের গর্জন আর বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল থাকলে দুই এক দিনের মধ্যে হালদার মা মাছ ডিমের নমুনা দিতে পারে। প্রতি বছর ডিম আহরণকারীরা ফাল্গুন মাস থেকে ডিম আহরণের সরঞ্জাম নিয়ে প্রস্তুত থাকে। এবারও ডিম আহরণকারীরা ইতোমধ্যেই তাদের যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। হালদা নদী হাটহাজারীর রাউজান ও ফটিকছড়ি সীমানার উপরদিয়ে বয়ে গেলেও । হাটহাজারী-রাউজান সীমানায় মা মাছ ডিম ছাড়ে বলে এ দুই উপজেলার হালদা নদীর ডিম ছাড়ার বিভিন্ন স্পট খুবই উপযোগী। এ তিথিতে বর্ষণ হলে মা মাছ হালদা নদীতে ডিম ছাড়তে পারে।
সূত্রে জানা যায়, হালদা নদীতে বর্তমানে বিভিন্ন কল-কারখানার ময়লা আর্বজনা ও ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধ ভাবে বালু উত্তলন ও রাতের আদারে মা মাছ ধরার কারণে হয়তো দেরীতে ডিম ছাড়তে পারে বলে এমন আশংকা হালদার তীর বর্তী জেলে ও ডিম সংগ্রহ কারীদের। এসব বন্ধ করতে বিভিন্ন এন-জিও সংস্থা গুলো কাজ করলেও বাস্তবে তাদের এই সব কেউ মানছে না। ফলে দিন দিন হালদার যে দুর-আবস্থা দেখা দিয়েছে। ৯০ দশকের পূর্বে এশিয়ার বিখ্যাত এই হালদার মিষ্টি পানিতে বিপুল পরিমাণ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ডিম দিয়েছিল। বর্তমানে সেই চিত্র ডিম সংগ্রহ কারীরা এখন আর দেখতে পাই না। নদীর বেশির ভাগ পুরা কপালি স্লুইট গেইট, নয়াহাট, অংকুরী গোনা, খলিপা ঘোনা, মধ্যম মার্দাশা, বশির মোহাম্মদ সিপাহীর ঘাট, নাপিতের ঘাটসহ এসব এলাকায় নদীর গভীরতা বেশি বলে সেখানে ডিম সংগ্রহ কারীরা জাল ফেলে ডিম আহরণ করে থাকে।
Discussion about this post