শুক্রবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ওয়ানডে শুরু হবে বেলা তিনটায়।
বৃহস্পতিবার দুই অধিনায়ক মাশরাফি ও হাশিম আমলা যখন সংবাদ সম্মেলন করছিলেন তখনও মিরপুরে ছিল তুমুল বৃষ্টি। কখনও থেমে, কখনও মুষলধারে সারাদিন ধরেই বৃষ্টি হওয়ায় ব্যহত হয় ক্রিকেটারদের অনুশীলন। বৃষ্টির বাধায় পড়তে পারে সিরিজের প্রথম ম্যাচও।
টানা বৃষ্টির কারণে সারাক্ষণ পিচ ঢাকা রয়েছে। মিরপুরের পিচ কেমন আচরণ করবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় আছেন মাশরাফি। তবে স্পিন সহায়ক উইকেট চেয়েছেন বলেই ইঙ্গিত দিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। সেক্ষেত্রে একাদশে ফিরতে পারেন লেগ স্পিনার জুবায়ের হোসেন। দলের বাইরে থাকতে হতে পারে পেসার রুবেল হোসেনকে।
৫২ ও ৩১ রানে দুটি টি-টোয়েন্টি হারার পরও টলেনি স্বাগতিকদের আত্মবিশ্বাস। এর মূল কারণ, যে ফরম্যাটে তারা শক্তিশালী এবার লড়াই হবে সেই ফরম্যাটে। টানা তিনটি দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ জেতা বাংলাদেশ নিজেদের মাটিতে লড়ে বাঘের মতোই। তবে পাকিস্তান, ভারতকে হারানো মাশরাফিদের এখন আরও বেশি বেগ হতে হবে।
মুশফিকুর রহিমের আঙুলের চোটে ভারত সিরিজে শেষ দুই ম্যাচে কিপিং করেন লিটন দাস। তার কাছ থেকে এবার গ্লাভস ফিরে পেতে পারেন মুশফিক। চোট কাটিয়ে মাহমুদউল্লাহ ফেরায় বাদই পড়তে পারেন লিটন।
তামিম ইকবাল-সৌম্য সরকারের উদ্বোধনী জুটির দিকে তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে টানা দুটি শতক করা মাহমুদউল্লাহ খেলতে পারেন তিন নম্বরে। সেক্ষেত্রে অপেক্ষায় থাকতে হবে চোট থেকে ফেরা এনামুল হককে।মুশফিক, সাকিব আল হাসান, সাব্বির রহমান ও নাসির হোসেনের উপস্থিতিতে মিডলঅর্ডার খুব শক্তিশালী। টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভালো করতে পারেনি স্বাগতিকদের মিডলঅর্ডার। কেউ থিতু হয়ে বাজে শট খেলে আউট হয়েছেন, কেউ উচ্চাভিলাষী শট খেলে পৌঁছাতে পারেননি দুই অঙ্কেই। জয়ে ফিরতে মিডলঅর্ডারের ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে দায়িত্বশীল ব্যাটিং চান অধিনায়ক।
দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের আগে পিচ নিয়ে দ্বিধায় আছে স্বাগতিকরা। দৃশ্যমান কোনো দুর্বলতা নেই প্রোটিয়াদের। ব্যাটিং সহায়ক উইকেট বা পেস সহায়ক উইকেটে অতিথিরাই বরং এক ধাপ এগিয়ে থাকবে। টি-টোয়েন্টি সিরিজে দেখা গেছে মন্থর উইকেটেও নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার সামর্থ্য তাদের রয়েছে।
টি-টোয়েন্টি সিরিজে স্পিনের বিপক্ষে ভালো করতে পারেনি স্বাগতিকরা। ওয়ানডে সিরিজে ভালো করতে অতিথি স্পিনারদের জবাব পেতে হবে মুশফিক-সাকিবদের। অ্যারন ফাঙ্গিসো, এডি লি তো আছেনই তাদের সঙ্গে, এখন যোগ দিয়েছেন আইসিসি ওয়ানডে বোলারদের র্যাংঙ্কিংয়ের দুই নম্বরে থাকা ইমরান তাহির।মর্নে মরকেল আসায় অতিথিদের শক্তি বেড়েছে পেস বোলিংয়েও। দুই টি-টোয়েন্টিতেই ভালো করা কাইল অ্যাবটও বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারেন স্বাগতিকদের জন্য।
টি-টোয়েন্টি সিরিজ বুঝিয়ে দিয়েছে দুই দলের শক্তির পার্থক্য। এবি ডি ভিলিয়ার্সের অনুপস্থিতিতে অতিথিদের ব্যাটিং শক্তি হয়তো একটু কমেছে। কিন্তু হাশিম আমলা ফেরায় ব্যাটিং নিয়ে তাদের কোনো দুর্ভাবনা থাকার কথা নয়। এর বাইরে কুইন্টন ডি কক, ফাফ দু প্লেসি, ডেভিড মিলার, জেপি দুমিনিরও সামর্থ্য আছে ম্যাচ নিজেদের করে নেওয়ার।
২০১১ সালের বিশ্বকাপের ম্যাচের পর এই প্রথম ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে দুই দল। সেই ম্যাচে ৭৮ রানে অলআউট হয়ে বিশাল ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ। জয়ে ফেরার সঙ্গে সেই দুঃস্বপ্নও পেছনে ফেলার সুযোগ স্বাগতিকদের সামনে।
Discussion about this post