মোঃ আসাদুজ্জামানঃ
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২ বছর ৮ মাস অর্থাৎ প্রায় ৩ বছর পর আইনজীবী তালিকাভুক্ত পরীক্ষার প্রথম ধাপ এম সি কিউ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়!
প্রায় ৫০,০০০ পরীক্ষার্থীর ভিতর কৃতকার্য হয় ৮,৭০০ জন এবং অকৃতকার্য হয় ৪০০০০+ শিক্ষানবিশ আইনজীবী!
অনেকেই শিক্ষানবিশ ৬ মাস সময় পূর্ন না হওয়ার দরুন গত ২৮ ফেব্রুয়ারির পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেণি। সব সংখ্যায় হিসেব করলে মিনিমাম ৭০০০০ শিক্ষানবিশ আইনজীবী বর্তমানে বিদ্যমান রয়েছে!
এই ৭০০০০ শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা দেশের সমস্ত জেলা জজ কোর্টে শিক্ষানবিশ হিসেবে আইনের চর্চা করে যাচ্ছেন।
এত সংখ্যক শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা সবাই অনার্স,মাস্টার্স; অনেক ডাবল মাস্টার্স কিংবা অনেক ব্যরিস্টার বিদ্যমান আছেন।
এত পয়সা খরচ করে উচ্চ শিক্ষা নিয়ে আইনের ডিগ্রি অর্জন করে সমস্ত শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা ই আজ দিশেহারা!
দেশের সমস্ত জেলা বারেই শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের পারিশ্রমিক হিসেবে দেয়া হয় ২০০ টাকা এবং সিনিয়র খুব উদার হলে সাথে জোটে দুপুরের খাবার!
মাস্টার্স পাশ করা একজন শিক্ষানবিশ না পারে পরিবারের কাছে বলতে না পারে তৃতীয় শ্রেণীর চাকুরি করতে!
কি করণীয় তাদের?
তার উপর পরীক্ষার ভয়াবহ জট! একটি পরীক্ষার সমস্ত কার্যক্রম শেষ হতে প্রায় ৪ বছর লেগে যায়!!
এই ৭০০০০ শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের প্রায় ৭০ ভাগ শিক্ষানবিশ আছন যাদের প্রতিদিন কোর্ট না করলে তাদের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন এসে যায়!
করোনার মহামারীর কারণে আজকে দেশের সমস্ত আদালত বন্ধ,কবে দেশের এই পরিস্থিতি ঠিক হবে তা একমাত্র মহান সৃষ্টিকর্তাই ভালো জানেন!
এখন শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা কোথায় যাবে?
তাদেরকে দেখার জন্য কি দেশের আইন অংগনে কোন অভিভাবক নাই?
এরা কি শুধুই অবজ্ঞার শিকার?
শিক্ষানবিশদের জন্য না আছে কোন ভাতা না আছে কোন সুযোগ সুবিধা!
শুধুই আছে অবজ্ঞা এবং উপহার হিসেবে পরীক্ষার ভয়াবহ জট!
এমতাবস্থায়, আমি একজন শিক্ষানবিশ হিসেবে আমার আকুল আবেদন, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নিকট এবং দেশের সমস্ত জেলা আইনজীবী সমিতির নিকট আপনারা অন্তত এই মহামারীর সময় এই শিক্ষানবিশদের দিকে একটু দয়ার দৃষ্টিতে তাকান। আমরা আপনাদেরই পরিবারের সদস্য।
লেখকঃ শিক্ষানবিশ আইনজীবী, ঢাকা জজ কোর্ট
Discussion about this post