ভেঙে পড়ার পর পেরিয়ে গেছে পুরো একটি দিন। এখনো চলছে উদ্ধার কাজ। দমকল বাহিনী আর পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরাও রয়েছেন ঘটনাস্থলে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, কলকাতায় বিবেকানন্দ উড়াল সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৯ জনে দাঁড়িয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) স্থানীয় সময় দুপুর সাড়ে ১২টার (বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টা) দিকে উত্তর কলকাতার গণেশ টকিজের কাছে আচমকাই ভেঙে পড়ে নির্মাণাধীন বিবেকানন্দ উড়ালসেতু। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো শতাধিক। ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়ে আছেন অনেকে।
উদ্ধার আহতদের কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু রক্তের সংকটে পড়েছে কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, সেতুটি ভেঙে পড়ার ঘটনায় স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার মন্তব্য করেছেন, মান বা যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সেতুটি ভেঙে পড়েনি। প্রকৃতিই এর জন্য দায়ী।
তার এ মন্তব্যে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে ভারতজুড়ে। তবে এ বিবৃতিতে গলেনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মন। নির্মাণ প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় হত্যা মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে সেতু তৈরিতে কাঁচামাল সরবরাহকারীদের বিরুদ্ধেও একই ধারায় মামলা করা হয়েছে। সেতু দেখভালের দায়িত্বে যারা ছিলেন, তারা ঠিকঠাক দায়িত্ব পালন করেছেন কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে নির্মাণ সংস্থার সাত শ্রমিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। এছাড়া নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের বালি, হাওড়া, উত্তরপাড়া, আনন্দপুর ও হায়দরাবাদের অফিসে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে।
স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যাওয়া নির্মাণ সংস্থার কয়েকজন শ্রমিক দাবি করেছেন, ব্রিজটি ঢালাইয়ের আগেই বেশ কয়েকটি নাট-বল্টুতে ত্রুটি ধরা পড়ে। সেগুলো হয় ভাঙা ছিল, নতুবা ঢিলা ছিল। এসব সত্ত্বেও সময় ও অর্থ অপচয়ের ভয়ে কাজ বন্ধ না করে তা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ আসে সংস্থার ওপর মহল থেকে। ত্রুটিপূর্ণ এসব নাট-বল্টুই ঝালাই করে এর ওপর ঢালাই দিতে বলা হয়।
Discussion about this post