ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার। যেখানে কেনা-বেচা চলে কয়েদিদের। সপ্তাহে যেখানে মূল্য হাকা হয় ১ থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত। আর ইলিশ ফাইলের নির্যাতন তো আছেই।
সদ্য জামিনে মুক্ত হয়ে এ রকম নিমর্মতার বর্ণনা দিলেন এক ব্যক্তি। তার ভাষায়, “ভিতরে আমদানি নামে একটা জায়গা আছে, আমদানি ৪। বিশাল বড় একটা হল রুম। এখানে সবাইরে লাইন ধইরা বসায়। মূলত কারণ হলো (নুতন আসামি) বিক্রি করা হয় ওখান থেকে। সাজাপ্রাপ্ত আসামি, তারা ইনচার্জ। একেকটা লোক বা দুইটা লোককে ৫ হাজার টাকা করে কিনে। ৫ হাজার টাকা করে আমাদের কিনে নিয়ে গেছে। কোন লোক যদি দেখে যে ভালো পয়সাওয়ালা, তাকে বেশি দামে চড়া দামে ক্রয় করে। বলে যে, প্রতি সপ্তাহে ৩৬০০ করে টাকা দিতে হবে। যেভাবে ক্রীতদাস, মানুষ বেচা-কেনা হইত; জেলহাজতে ঠিক ঐভাবেই মানুষ বেচা-কেনা হয়।”
অন্যদিকে জেলে কয়েদিদের সাথে দেখা করতে কারা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নিতে হয় টোকেন।
কারা বিধি অনুযায়ী, কয়েদিদের সাথে স্বজনদের দেখা-সাক্ষাতের কোনো বিনিময় মূল্য নেই। কিন্তু, বাস্তবতা হলো এখানে টোকেন ছাড়া সবই অচল। টোকেন প্রতি গুনতে হয়, ২শ’ থেকে ৪শ’ টাকা। এছাড়া, কারাগারে যে কোনো সুযোগ-সুবিধার জন্যই খরচ করতে হয়, কাড়ি কাড়ি অর্থ। ইলিশ ফাইলের মতো নির্মমতা থেকে বাঁচতে কয়েদিপ্রতি সপ্তাহে দিতে হয়, এক থেকে চার হাজার টাকা।
এ প্রসঙ্গে সাবেক ডিআইজি প্রিজন্স মেজর অবসরপ্রাপ্ত শামসুল হায়দার সিদ্দিকী জানালেন, দেখা করতে যে টাকা নেয়া হচ্ছে তা দুর্নীতি।
আর কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইফতেখার উদ্দীন জানালেন, বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।
কারা মহাপরিদর্শক জানান, সিন্ডিকেটের কারণে এরকম হয়রানির শিকার হচ্ছেন আসামিরা। তবে নতুন কারাগারে এই সমস্যা দূর হবে কিনা, তা নিয়েও সন্দেহ জানালেন তিনি।
এই কারা কর্মকর্তা আরো জানালেন, সাক্ষাতপ্রার্থীদের সমস্যা নিরসনে নতুন একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। যা শিগগিরই চালু হবে, টাঙ্গাইল কারাগারে। সূত্র: চ্যানেল-24
Discussion about this post