বৈধ ব্যবসায় সহায়তা ও অবৈধ মালামাল বহন প্রতিরোধে দেশের চারটি গুরুত্বপূর্ণ কাস্টমস হাউজে ম্যানুয়াল পদ্ধতির পরিবর্তে কন্টেইনার স্ক্যানিং সিস্টেম চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।
রাজস্ব বোর্ড সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পণ্যের দ্রুত খালাস নিশ্চিতকরণে স্ক্যানারের ব্যবহার খুবই জরুরি। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দর ও বিমানবন্দরের রপ্তানি কার্গো এলাকায় স্ক্যানার ব্যবহার করা হয়। কিন্তু বেনাপোল, চট্টগ্রাম, কমলাপুর আইসিসিডি ও মংলা কাস্টম হাউজে স্ক্যানার নেই। এতে আমদানি ও রপ্তানির ক্ষেত্রে ঝুঁকি রয়ে গেছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বলেন, চারটি গুরুত্বপূর্ণ কাস্টম হাউজে শিগগিরই কন্টেইনার স্ক্যানিং সিস্টেম স্থাপন করবো। চট্টগ্রাম কাস্টমের স্ক্যানার ইতোমধ্যে রিলিজ হয়ে গেছে। বাকিগুলোও হয়ে যাবে। এতে বাণিজ্য আরও সহজ হবে।
তিনি আরও বলেন, এই পন্থায় হাতের স্পর্শ অনেকাংশে কমে আসবে। কাস্টম হাউজে অনেক সময় সন্দেহ করে বড় বড় ল্যাগেজ খোলা হয়। এতে সময় ব্যয় হয় অনেক। কিন্তু স্ক্যানার বসালে ল্যাগেজ খোলা লাগবে না। দ্রুত সময়ে চেকিংসহ আমদানি রপ্তানির কাজ সম্পন্ন করা যাবে। অবৈধভাবে কেউ যদি কোনো পণ্য বাইরে থেকে নিয়ে আসতে চায় তাহলে সহজেই ধরা পড়বে এতে।
জানা যায়, এই লক্ষ্যে ‘প্রকিউরমেন্ট অব কন্টেইনার স্ক্যানার ফর বেনাপোল, চট্টগ্রাম, কমলাপুর আইসিসিডি ও মংলা’ প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। এতে প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৯ কোটি ৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে আসবে ২৫ কোটি ৪৭ লাখ ও প্রকল্প সাহায্য থেকে আসবে ৯৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা। প্রকল্পের কাজ ২০১৬ সালেই সম্পন্ন করবে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।
প্রকল্পের আওতায় কন্টেইনার ডিসপোজাল সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব বাড়ানো হবে। জনশক্তির ফলপ্রসূ ও দক্ষতা প্রয়োগ, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বাস্তবায়নসহ বাণিজ্যে মানুষের হস্তক্ষেপ ও ব্যয় কমানো হবে।
প্রকল্পটি যথাযতভাবে বাস্তবায়িত হলে জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক ও যুক্তরাষ্ট্রের পোর্ট সিকিউরিটির বিভিন্ন ধারা বা কোড প্রতিপালন সম্ভব হবে বলে মনে করে এনবিআর।
অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ জানায়, প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রকল্প এলাকার নাগরিক সুবিধাদির গুণগত মান বৃদ্ধিসহ নগরবাসীর জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
এছাড়া, সুশাসন, রেকর্ডপত্র কম্পিউটারাইজেশন, প্ল্যানিং, কমিউনিটি মোবিলাইজেশন, আইটি প্রভৃতি ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বাড়বে। প্রকল্পের মাধ্যমে নগর অঞ্চলের দরিদ্র জনগণের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, অ-কৃষি খাতে নারীদের কর্মসংস্থান নিশ্চিতকরণ এবং বাণিজ্য পরিবেশ আধুনিক হবে।
Discussion about this post