কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি: গত ১৭ জানুয়ারি মঙ্গলবার দিবাগত রাতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের বাসায় ডাকাতি ও হামলার ঘটনায় মামলা নিয়ে দেখা দিয়েছে জটিলতা। বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার কর্তৃক সদর দক্ষিণ থানায় মামলা দায়েরের আবেদনের (স্মারক নং- কু.বি/রেজি./মোকদ্দমা-১৪৬/২০০৯/১১৭৬১, তাং-০৬/০২/১৭খ্রিঃ) প্রেক্ষিতে সদর দক্ষিণ থানার ওসি স্বাক্ষরিত ফিরতি এক পত্র মারফত মামলা নিয়ে জটিলতার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়।
আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের যে দুই সহকারী অধ্যাপকের বাসায় হামলা/ডাকাতির অভিযোগ উঠেছে তাদের যেকোন একজন ভুক্তভোগীকে থানায় স্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে ঘটনার তারিখ ও সময়, ঘটনাস্থল, কতজন ঘটনায় জড়িত, তারা জ্ঞাত অথবা অজ্ঞাত কিনা, বয়স, পড়নের কাপড়, তাদের আঞ্চলিক ভাষা, লুণ্ঠিত মালামাল সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিয়ে মামলা রুজু করতে হবে।
আবেদনপত্র মারফত আরো জানা যায়, রেজিস্ট্রার কর্তৃক প্রেরিত আবেদনপত্র অনুযায়ী যদি মামলা দায়ের করা হয়, তাহলে বিজ্ঞ আদালতে সেটি ত্রুটিপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং এর দায় সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের উপর বর্তাবে। তাই ভূক্তভোগীদের যেকোন একজনকে থানায় উপস্থিত থেকে মামলা দায়ের করতে অনুরোধ করা হয়।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায় , কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকটবর্তী নাজির ভিলার ২য় তলায় গত ১৭ জানুয়ারি মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৪টায় তারিক হোসেনের বাসায় দরজা ভেঙ্গে কিছু দুর্বৃত্ত ধারালো অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করে। হামলার ঘটনা টের পেয়ে পাশের ফ্ল্যাট থেকে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক আশিখা আক্তার ও তার শ্বশুর ছুটে এলে দুবৃর্ত্তরা তাদেরকেও আহত করে। চেঁচামেচিতে দুর্বৃত্তরা সটকে পরার সময়ে ঐ শিক্ষকের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। পরে সকালে ঘটনাস্থলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ ও প্রক্টরসহ শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দরা যায়। পরে সদর দক্ষিণ থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
মামলার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি মো: নজরুল ইসলাম (পিপিএম) বিডি ল নিউজ কে জানান, ‘হামলা অথবা ডাকাতির ঘটনা যেহেতু বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাইরে এবং ঘটনায় ভূক্তভোগীরা এখন সুস্থ সেই হিসেবে ভূক্তভোগীদের যে কেউ একজন থানায় এসে মামলা দায়ের করতে হবে। ভূক্তভোগী ব্যতিত বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন বা অন্য কেউ মামলা করতে চাইলে নিয়ম বহির্র্ভূত বিধায় তা গ্রহণযোগ্য নয়।’
ভূক্তভোগী একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো: তারিক হোসেন জানান, ‘বিষয়টি আমি শিক্ষক সমিতিকে জানিয়েছি।’
যোগাযোগ করা হলে শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মো: আবু তাহের বিডি ল নিউজ কে বলেন, ‘বিষয়টি আমরা জেনেছি। আগামীকাল শিক্ষক সমিতির সভায় তা আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো: মজিবুর রহমান মজুমদার বিডি ল নিউজ কে বলেন, ‘মামলার জন্য প্রশাসন কর্তৃক সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু নিয়ম বহির্ভূত বিধায় থানা কর্তৃক মামলা গ্রহণ করতে অপারগতা প্রকাশ করা হয়। ভূক্তভোগী দুজন শিক্ষককে আমি মামলার বিষয়ে অবিহিত করেছি। পরবর্তী করণীয় তারা ঠিক করবে।’
Discussion about this post