সম্প্রতি কেরানীগঞ্জে স্থানান্তরিত হওয়া কেন্দ্রীয় কারাগারের অন্যান্য সুবিধা চালু না হলেও চালু হয়ে গেছে ‘ডাবল’ ঘুষ ব্যবস্থা।
চালু হতে না হতেই বেশ পাকাপোক্ত হয়ে উঠেছে এ ব্যবস্থা। ফলে কারাগারের কোনো বন্দির সঙ্গে দেখা করতে চাইলে বিনা বাক্যব্যয়ে স্বজনদের গুণতে হচ্ছে ডাবল ঘুষ।
সরেজমিনে কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকা ঘুরে ও অপেক্ষারত স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেলো।
কারাগারে বন্দি শ্যালক মো. বসিরুজ্জামানকে দেখতে রাজধানীর মিরপুর থেকে আসা তার বোন জামাই বলেন, ডাবল ঘুষ দিয়ে দেখা করেছি।
ডাবল ঘুষের ব্যাখ্যায় তিনি জানান, প্রথমে বিনামূল্যের দর্শনার্থী টিকিট সংগ্রহ করতে হয় ২০০ টাকা দিয়ে। কিন্তু ওই টিকিটে সাক্ষাৎ কক্ষে গিয়েও তিনি বসিরের দেখা পাননি। পরে সময় শেষ হয়ে গেলে আবারো ২০০ টাকা দিয়ে বিনামূল্যের আরেকটি টিকিট নিয়ে ভেতরে যান। এবারও বন্দির দেখা না পাওয়ায় এক কারারক্ষী ৫০০ টাকা ঘুষের বিনিময়ে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। কথামতো ৫০০ টাকা দেওয়ার পর তিনি বন্দিকে ডেকে দেন।
একই অভিযোগ করলেন মিরপুর থেকে আসা রহিমা বেগম, লালবাগ থেকে আসা আনোয়ার হোসেন, জুরাইন থেকে আসা ফিরোজ ও নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা দুলাল।
মিরপুর থেকে আসা খোরশেদা বেগম নামে এক নারী জানান, তার ছেলে নাহিদুল ইসলাম রনি গত রমজান মাসে গ্রেফতার হয়েছে। এখানে নিয়ে আসার পর ছেলেকে তিনদিন দেখতে এসে, ঘুষ দিয়ে টিকিট নিয়েও ছেলেকে দেখতে পাননি। সাক্ষাৎ কক্ষের ভিতরে যে ঘুষ দিতে হয় বিষয়টি তার জানা ছিল না। পরে আজ (শুক্রবার) ভিতরে ৫০০ টাকা দিয়ে ছেলের সঙ্গে দেখা করেছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, সাক্ষাৎ কক্ষে চিৎকারের মতো করে বললেও কথা ঠিকমতো শোনা যায় না। এছাড়া গত ৮ দিন ধরে খিচুড়ি ছাড়া আর কোনো খাবার পাচ্ছে না বন্দিরা, এমন অভিযোগ করেন তিনি।
এ ব্যাপারে কারাগার পরিদর্শনে এসে কারা মহাপরিদর্শক সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, এসব বিষয়ে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাক্ষাৎ কক্ষের বিষয়ে তিনি বলেন, শিগগিরই সাক্ষাৎ কক্ষের ভিতরের গ্লাস অপসারণ করে সেখানে গ্রিল স্থাপন করা হবে। যাতে দর্শনার্থীরা নির্বিঘ্নে কথা বলতে পারেন।
Discussion about this post