সৌদি দূতাবাসের কর্মকর্তা খালাফ আল আলী হত্যা মামলার রায় ঘোষণার দিন পিছিয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) রায় ঘোষণার জন্য মামলাটি আদালতের কার্যতালিকায় রাখা ছিল। কিন্তু সেটি পিছিয়ে আগামী ১৭ অক্টোবর পুনঃশুনানির জন্য নতুন দিন ধার্য করেছেন আদালত।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির মো.আবদুল ওয়াহহাব মিঞার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ নতুন তারিখ নির্ধারণ করেন।
মঙ্গলবার সকালে আপিলের কার্যক্রম শুরু হলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, ভুলক্রমে এ মামলাটি কার্যতালিকায় উঠে এসেছে। এটি রায়ের জন্য রবিবার তারিখ ধার্য থাকবে। এসময় এ মামলার অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড মাহমুদা বেগম আদালতকে জানান, এ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সাইফুলের পক্ষে আইনজীবী না থাকায় শুনানিতে অংশ নিতে পারেননি। এখন ওই আসামির পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং তিনি শুনানিতে অংশ নিতে চান। পরে আদালত বিষয়টি পুনঃশুনানির জন্য ১৭ অক্টোবর পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন।
পরে আপিল বিভাগের ওয়েবসাইটে গিয়েও দেখা যায়, এ মামলার ফলাফলে লেখা রয়েছে ‘পরবর্তী শুনানির জন্য ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত মূলতবি।’
সোমবার (৯ অক্টোবর) বিকালে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত আপিল বিভাগের মঙ্গলবারের কার্যতালিকার এক নম্বরে খালাফ হত্যার মামলাটি রাখা ছিল।
এ মামলায় আসামি পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী হেলাল উদ্দিন মোল্লা। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিত দেবনাথ।
২০১২ সালের ৫ মার্চ রাত ১টার দিকে গুলশানের কূটনৈতিক এলাকার ১২০ নম্বর সড়কের ১৯/বি নম্বর বাসার সামনে গুলিবিদ্ধ হন খালাফ আল আলী (৪৫)। ৬ মার্চ ভোরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
এর কিছুদিন পর ওই বছরের ৪ জুন দক্ষিণখান থানার গাওয়াইর এলাকা থেকে সাইফুল ইসলাম মামুন, আকবর আলী লালু ওরফে রনি ও আল আমিন নামে তিন জনকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশের ডাকাতি, দস্যুতা ও ছিনতাই প্রতিরোধ টিম।
এসময় তাদের কাছ থেকে কালো রঙের একটি বিদেশি পয়েন্ট ২২ বোরের রিভলবার জব্দ করা হয়। অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে ওইদিনই তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা দায়ের করা হয়।
আসামি মামুন ও আল আমিন আদালতে স্বীকার করে যে, ২০১২ সালের ৫ মার্চ রাতে ছিনতাই করতে বাধা দেওয়ায়, তারা খালাফ আল আলীকে ওই অস্ত্রটি দিয়ে গুলি ও হত্যা করে।
পরে আসামি মামুন, আল আমীন,আকবর আলী লালু ওরফে রনি ওরফিকুল ইসলাম খোকনকে খালাফ হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখায় (শ্যোন অ্যারেস্ট) পুলিশ।
২০১২ সালের ৩১ অক্টোবর ওই চার জনসহ পলাতক সেলিম চৌধুরী ওরফে সেলিম আহমেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠ নকরে এ মামলার বিচার শুরু করেন ঢাকার ৪ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোতাহার হোসেন।
একই বছরের ৩০ ডিসেম্বর খালাফ আল আলীকে হত্যার দায়ে ৫ আসামির সবাইকে ফাঁসির আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিলের শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর আসামি সাইফুলকে বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যু দণ্ডাদেশ বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।
মৃত্যু দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত অন্য তিন জনের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং পলাতক একজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
আল আমীন, আকবর আলী লালু ওরফে রনি ও রফিকুল ইসলাম খোকনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং পলাতক সেলিম চৌধুরী ওরফে সেলিম আহমেদকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন রাষ্ট্রপক্ষ। ২০১৪ সালের ২৩ জুলাই এ আপিল মঞ্জুর করেন আপিল বিভাগ।
Discussion about this post