বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাক্ষিদের জবানবন্দিকালে সাক্ষি দেখে দেখে বলার অভিযোগ তুলে আদালত বর্জন করেন তার আইনজীবীরা। পরে অবশ্য তারা আবার আদালতে ফিরে আসেন। এদিকে আগামী ২৬ নভেম্বর পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেছেন আদালত।
এদিন জবানবন্দি প্রদানকারী জব্দ তালিকার সাক্ষিরা হলেন- ডাচবাংলা ব্যাংক মাতুয়াইল শাখার অ্যাসিসটেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট কামরুজ্জামান, দুর্নীতি দমন কমিশনে নিয়জিত পুলিশ কন্সটেবল মঞ্জুরুল হক এবং সিরাজউদ্দিন। এ নিয়ে মামলাটিতে ২৫ সাক্ষির সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হলো। এদের মধ্যে ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পূর্ণ শেষ হয়েছে এবং ৬ জনের জেরা বাকি।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় জেরা শুরু হওয়ার আগে খালেদা জিয়া চোখের চিকিৎসার জন্য লন্ডনে থাকায় তার অনুপস্থিতির জন্য সময় আবেদন করা হয়।
অন্যদিকে জিয়া অরফানেজ মামলায় হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে লিভ টু আপিল বিচারাধীন থাকায় এবং জিয়া চ্যারিটেল ট্রাস্ট মামলায় সিনিয়র আইনজীনীরা আদালতে উপস্থিত হতে না পারায় সাক্ষ্যগ্রহণ পেছাতে সময়ের আবেদন করেন। আদালত খালেদার অনুপস্থিতির আবেদন মঞ্জুর করে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার সাক্ষির জবানবন্দি শুরুর আদেশ দেন।
এরপর জবানবন্দিকালে সাক্ষি দেখে দেখে বলার অভিযোগ তুলে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা ১০ মিনিটের জন্য আদালত বর্জন করে পরে আবার ফিরে আসেন।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ ওই আদালতের তৎকালীন বিচারক বাসুদেব রায় দুই মামলায় খালেদা ও তারেক রহমানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এরপর থেকেই এ বিচারকের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে আসছিল খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। ওই অনাস্থার মধ্যেই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু করেন তিনি। এরপরই গত ১৮ ডিসেম্বর তাকে বদলি করে আবু আহমেদ জমাদারকে নিয়োগ দেয়া হয়।
এতিমদের জন্য বিদেশি থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে জিয়া অরফানেজ মামলাটি দায়ের করে দুদক। ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় এই মামলাটি দায়ের করা হয়।
২০০৯ সালের ৫ আগস্ট দুদক আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। অভিযোগপত্রে খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান, সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানকে আসামি করা হয়।
আসামি তারেক রহমান সরকারের নির্বাহী আদেশে দেশের বাইরে আছেন। মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল এবং ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ জামিনে আছেন। ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক।
অন্যদিকে ২০১১ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলাটি দায়ের করে দুদক। এ মামলায় ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করে দুদক। এ মামলায় ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়।
মামলাটিতে বিএনপি নেতা সচিব হারিছ চৌধুরী এবং তার তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান আসামি।
Discussion about this post