খুলনা প্রতিনিধি: খুলনা: খুলনা সিটি করপোরেশন (খুসিক) নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রভাবমুক্ত রাখতে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) পক্ষ থেকে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী, পলাতক আসামি গ্রেফতার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের লক্ষ্যে এ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
২০ এপ্রিল রাত থেকে এ অভিযান শুরু হয়ে চলবে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। এরপর দু-তিন দিন বিরতির পর আবার শুরু হবে এবং তা চলবে নির্বাচনের দিন পর্যন্ত। এদিকে, খুলনার ২৮৯টি ভোট কেন্দ্র পাহারা দেয়ার জন্য ৫ হাজার পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আগামী ২৪ এপ্রিল প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ করার পর পরই প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনি প্রচারণায় নেমে পড়বেন। নির্বাচনি প্রচারণা ও ভোটের আগের দিন এবং ভোটের দিন সন্ত্রাসী অস্ত্রধারীরা বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে প্রতিপক্ষ প্রার্থী ও ভোটারদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে প্রভাবিত করতে পারে এমন অনুমানের ভিত্তিতে বিশেষ অভিযান পরিচালিত হবে।
সকল প্রার্থী তাদের নির্বাচনি প্রচারণা ও ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট প্রদান করতে পারে সে লক্ষ্যে কেএমপির পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। সন্ত্রাসী অস্ত্রধারীদের কারণে নির্বাচন যাতে কোনোভাবেই প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সে লক্ষ্যে প্রাণান্ত চেষ্টা চালাবে কেএমপি।
বিশেষ অভিযানের পাশাপাশি নগরীর বিভিন্ন প্রবেশদ্বারে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, জিরোপয়েন্ট, রূপসা ঘাট, জেলখানা ঘাট, আইডব্লিউটিএ ঘাট, পথের বাজার, আড়ংঘাটা বাইপাস রোড, খালিশপুরের বিভিন্ন ঘাট এলাকা।
সূত্র জানায়, নগরীর আটটি থানা যথাক্রমে খুলনা সদর, সোনাডাঙ্গা, খালিশপুর, দৌলতপুর, খানজাহান আলী, আড়ংঘাটা, হরিণটানা ও লবণচরা থানা এলাকায় নিয়মিত যে ফোর্স রয়েছে সেখানে আরো বেশি ফোর্স নিয়োগ দেয়া হয়েছে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করার জন্য।
এ ব্যাপারে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের বিশেষ পুলিশ সুপার (সিটিএসবি) রাশিদা বেগম বলেন, খুসিক নির্বাচন উপলক্ষে শুক্রবার থেকে নগরীর আট থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। অভিযানে সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী, পলাতক আসামি ও অবৈধ অস্ত্রধারীদের গ্রেফতার করা হবে। এছাড়া আগামী ১৫ মে খুলনার ২৮৯টি ভোট কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে ৫ হাজার পুলিশ সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে। তবে গুরুত্বপূর্ণ ও সাধারণ ভোট কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত কেন্দ্রগুলোতে কতজন করে পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবে তা এখনো নিশ্চিত হয়নি। কোন ভোট কেন্দ্রে কতসংখ্যক পুলিশ থাকবে তা আগামী ২৬ এপ্রিল নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভার পর ঠিক হবে।
উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে ২৮৯টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ২২৬টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অবশিষ্ট ৬৩টি কেন্দ্রকে সাধারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে কেএমপির পক্ষ থেকে ২২৬টি আসনকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী মেয়র প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত দলের খুলনা মহানগর সভাপতি ও সাবেক সাংসদ তালুকদার আব্দুল খালেক, বিএনপি মনোনীত দলের মহানগর সভাপতি ও সাবেক সাংসদ নজরুল ইসলাম মঞ্জু, জাতীয় পার্টি মনোনীত দলের মহানগর সদস্য সচিব এস এম শফিকুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত দলের মহানগর সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা মুজাম্মিল হক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) মনোনীত দলের মহানগর সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাবু।
সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩১টি ওয়ার্ডে ১৮১ জন এবং সংরক্ষিত ১০টি নারী কাউন্সিলর পদে ৪৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। ২৮৯টি ভোট কেন্দ্রে ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯৩ জন ভোটার ভোট দেবেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৪৮ হাজার ৯৮৬ জন এবং নারী ভোটার ২ লাখ ৪৪ হাজার ৭ জন। নির্বাচনে ২৮৯টি ভোট কেন্দ্রে ভোট কক্ষ থাকবে ১ হাজার ৫৬১টি এবং ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা থাকবেন ৪ হাজার ৯৭২জন।
Discussion about this post