অ্যাকশন এইড নামে একটি সংস্থা রাজধানী ঢাকায় এক গবেষণা চালিয়ে বলেছে, গণপরিবহনে যাতায়াতকারী নারীদের শতকরা ৪১ ভাগ যৌন হয়রানির শিকার হন। কী কারণে এই হয়রানি তাও সংস্থাটি চিহ্নিত করেছে। আবার নারীদের যৌন হয়রানি রোধে কিছু সুপারিশও করেছে সংস্থাটি।
সংস্থাটির এই গবেষণায় দেখা যায়, রাজধানী ঢাকার জনসংখ্যার তুলনায় এখানে গণপরিবহনের সংখ্যা মাত্র এক-তৃতীয়াংশ। এই সংখ্যা বাড়ানোর জন্য সরকারি উদ্যোগ নেই বলেও গবেষণায় বলা হয়েছে। আবার যানজটের কারণে অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক না হওয়ায় মালিকরা নিজেদের উদ্যোগে গণপরিবহনের জন্য গাড়ি নামাতে চান না। অন্যদিকে হয়রানি এড়াতে নগরে দিন দিন প্রাইভেট গাড়ির সংখ্যা বেড়ে চলেছে। যেটা আবার যানজট সৃষ্টির জন্য বাড়তি কারণ হয়ে উঠছে।
গবেষণাটি গণপরিবহনে নারীদের হয়রানি নিয়ে করা হলেও এতে নগরীর যোগাযোগ ব্যবস্থার হাল-হকিকতও উঠে এসেছে। সে কারণে এমন একটি গবেষণাকে সাধুবাদই জানানো উচিত।
কিন্তু প্রশ্ন হলো গবেষণার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে। গবেষণায় হয়রানির বিষয়টিকে স্রেফ যৌন হয়রানির মধ্যে আটকে রাখা হয়েছে। এখানে যদিও বলা হয়নি যে, নারী কাদের দ্বারা হয়রানির শিকার হচ্ছে। তবে এটা নিশ্চয় কাউকে বুঝিয়ে বলার দরকার হয় না যে কাদের যৌন হয়রানির জন্য দায়ী করা হয়েছে। এই গবেষণাকে মেনে নিলে বলতে হয় রাজধানীতে যে সব পুরুষ প্রতিদিন যুদ্ধ করে গণপরিবহনে অফিস আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা কর্মস্থলে যাতায়াত করেন তাদের একটি বড় অংশই ধর্ষকামী এবং তারা ইচ্ছাকৃতভাবেই নারীদের যৌন হয়রানি করেন। গণপরিবহনে যাতায়াতকারী পুরুষদের ওপর কোনো গবেষণা ছাড়াই অ্যাকশন এইডের এই গবেষণা কতটুকু গ্রহণযোগ্য তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। তবে কিছু কিছু ঘটনা যে ঘটে না তা দাবি করা যাবে না। কিন্তু যে দেশে এখনো পর্যন্ত নারীদের যৌন হয়রানির ঘটনা আড়াল করা হয়ে থাকে, সেদেশে ঢালাওভাবে নারীদের যৌন হয়রানির গবেষণাটি নারীদের জন্যও সম্মানজনক নয়।
Discussion about this post