গোয়েন্দা নজরদারির কাজে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ড্রোন ব্যবহার করবে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই)। গতকাল বুধবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে সংস্থাটি এ তথ্য জানিয়েছে।
বৈঠকের কার্যপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতিকূল পরিবেশে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ এবং গুরুত্বপূর্ণ এলাকার নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকায় মনুষ্যবিহীন উড়ন্ত যান (ড্রোন) ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানের নিরাপত্তায় এন্টি ড্রোন (ড্রোন নাশক) পদ্ধতি সংযোজন করা হবে।
বৈঠক শেষে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কমিটির সদস্য হোসনে আরা বেগম গণমাধ্যমকে বলেন, দেশের সার্বিক নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ডিজিএফআই ড্রোন ব্যবহারের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। কমিটি তাদের প্রস্তাবে সায় দিয়েছে।
তবে কমিটির সভাপতি সুবিদ আলী ভুঁইয়া বলেন, ড্রোন নিয়ে বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়নি। মূলত ডিজিএফআইয়ের জনবলকাঠামো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কমিটি সংস্থাটির জনবল বাড়ানোর সুপারিশ করেছে। বর্তমান অনেক জায়গায় তারা ভাড়াবাড়িতে অফিস করছে। এতে তাদের কাজের গোপনীয়তা নষ্ট হয়। সে জন্য তাদের নিজস্ব জমি দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
কার্যপত্রে আরও বলা হয়েছে, ডিজিএফআইয়ের কর্মকাণ্ডকে আরও গতিশীল করতে গত অর্থবছরে ৩৭টি জিপ, ৬টি পিকআপ ভ্যান, ২৭টি কার ও একটি মাইক্রোবাস কেনা হয়েছে। গত বছরের ১৮ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী ঢাকার বাইরে ডিজিএফআইয়ের আটটি শাখা খোলার অনুমোদন দিয়েছেন। এর মধ্যে গত ১ আগস্ট থেকে অস্থায়ী ভিত্তিতে ভাড়াবাড়িতে সাতক্ষীরা, দিনাজপুর, নোয়াখালী, নারায়ণগঞ্জ ও পটুয়াখালীতে শাখার কাজ শুরু হয়েছে। পাবনা, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুরে শাখার কাজ চলমান আছে। তবে এসব শাখা অফিসের জন্য জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
জাতীয় স্বার্থে দেশের বাইরে গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়াতে ও সামরিক কূটনীতিক সক্ষমতা বাড়াতে ২০টি প্রতিরক্ষা শাখা সৃজনের প্রস্তাব করা হয়েছে বলে ডিজিএফআইয়ের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, কাকরাইলে সংস্থাটির সাড়ে তিন একর জমির মধ্যে এক একর মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অবশিষ্ট জমি প্রস্তাবিত প্রাকৃতিক ইতিহাস জাদুঘর নির্মাণের জন্য হস্তান্তরের বিষয়ে একমত পোষণ করা হয়েছে। তাই সংস্থাটির কাজের সুবিধার্থে সুবিধাজনক স্থানে এক একর জমি হস্তান্তরের প্রস্তাব করা হয়েছে।
সভায় আরও জানানো হয়, ডিজিএফআইয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাসস্থান সমস্যার সমাধানে সম্প্রতি একনেকে ১৫০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী সংস্থায় কর্মরত সবার জন্য ৩০ শতাংশ বিশেষ ভাতা অনুমোদন করেছেন।
সুবিদ আলী ভুঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ, মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী ও হোসনে আরা বেগম অংশ নেন। সূত্র: প্রথম আলো
Discussion about this post