বিচার ব্যবস্থায় লাগছে ডিজিটাল প্রযুক্তির ছোঁয়া। আর তাই ১৫৬ বছরের প্রাচীন ব্যবস্থা ভেঙে এবার ই-জুডিশিয়ারি ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। এর মাধ্যমে বিচারপ্রার্থীরা ঘরে বসেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তার মামলার গতি-প্রকৃতি, রায় জানতে পারবেন। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র বলছে, প্রথম পর্যায়ে দেশের ১০টি জেলাকে পাইলট প্রকল্পের আওতায় আনা হচ্ছে। এ জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২৭ কোটি ৪৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এ প্রকল্পের সাফল্যের ভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে দেশের সবগুলো জেলাতেই এ ব্যবস্থা চালু করা হবে। মামলা জট নিরসন ও বিচারপ্রার্থীদের দুর্ভোগ কমাতে এ উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
আজ মঙ্গলবার (১২ জুলাই) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ই-জুডিশিয়ারি পাইলট প্রকল্প শীর্ষক এই প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিতব্য সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করবেন।
প্রকল্প প্রস্তাবনা অনুসারে ঢাকা, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, গোপালগঞ্জ, নাটোর,যশোর,মৌলভীবাজার এবং রংপুর এ ১০ জেলায় প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। সুপ্রিমকোর্ট ও বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের কার্যকাল ধরা হয়েছে ২০১৬ জুলাই থেকে ২০১৯ জুলাই পর্যন্ত।
জানা গেছে, ই-জুডিশিয়ারি কার্যকর হলে বিচারপ্রার্থীরা ঘরে বসেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তার মামলার গতি-প্রকৃতি, রায় জানতে পারবেন। অন্যদিকে মামলার তথ্য সংরক্ষণের মাধ্যমে অত্যন্ত কম সময়ের মধ্যে উচ্চ আদালত ও নিম্ন আদালতের মধ্যে বিচার সংশ্লিষ্টরা পারস্পারিক কার্যক্রম সম্পাদন করতে পারবেন। এছাড়াও পুরাতন মামলার রের্কড এবং সংশ্লিষ্ট রায় ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা হবে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্টার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ই-জুডিশিয়ারি’ ব্যবস্থা চালু হলে বিচার বিভাগে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে। বিচারপ্রার্থীসহ বিচার সংশ্লিষ্ট সকলেই এতে উপকৃত হবেন। কারণ সবাই ঘরে বসে তার মামলার খবর জানতে পারবেন। এছাড়া প্রশাসনিক কার্যক্রমেও গতিশলীতা আরো বাড়নো সম্ভব হবে।
বিচার বিভাগের পরিবর্তন প্রসঙ্গে সৈয়দ আমিনুল ইসলাম বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে মামলা ব্যবস্থপনা, রের্কড রুম, লাইব্রেরিসহ সংশ্লিষ্ট সব কিছুতেই ডিজিটাল পদ্ধতির ব্যবহার শুরু হবে। এতে উচ্চ আদালত ও অধস্তন (নিম্ন) আদালতের মধ্যে দৈনন্দিন কার্যক্রম সম্পাদন আরো সহজতর হবে।
ই- জুডিশিয়ারি শীর্ষক প্রকল্পের কার্যক্রম প্রসঙ্গে প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, প্রকল্পের আওতাভুক্ত ১০টি জেলার ২৬২টি কোর্ট রুমকে ই-কোর্টে হস্তান্তর, বিচারকদের এক হাজার ৬৫০টি ট্যাব/ল্যাপটপ প্রদান, রেকর্ড রুম অটোমেশন এবং পুরাতন রেকর্ড রুম ডিজিটাইজেশন করা, বিচার ব্যবস্থার জন্য এন্টারপ্রাইজ আর্কিটেকচার উন্নয়ন, এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্লানিং (ইআরপি) সফটওয়্যার উন্নয়ন, বায়োমেট্টক অ্যাটেনডেন্স সিস্টেম চালু, বিচারক ও বিচার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ প্রদানসহ ১৪টি বিষয়ে কার্যক্রম সম্পাদন করা হবে।
Discussion about this post