বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি: বিয়ানীবাজার থানার আলোচিত এস.আই জহিরুল ইসলাম তালুকদারকে বদলী করা হয়েছে। উপজেলাজুড়ে বহুল আলোচিত-সমালোচিত এস. আই জহিরুলের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় গতকাল মঙ্গলবার এস.আইজহিরুলের বদলী আদেশ সিলেটের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এসে পৌছে বলে একটি সূত্র জানায়। সিলেটের পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনা বিষয়টির সতত্যা নিশ্চিত করেছেন। তারবদলীর খবর শুনে এলাকার জনমনেস্বস্থি ফিরে এসছে।জানা যায়, বিয়ানীবাজার থানায়অনুমান ২বছর পূর্বে যোগ দেন এস.আই জহিরুল ইসলাম তালুকদার। যোগদানের পরই রাজনৈতিক নজর কাড়ঁতে তিনি বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের উপর চড়াও হন। স্থানীয় প্রথম সারির বিরোধী নেতাদের গ্রেফতার করে ক্ষমতাসীন দল ও পুলিশের উপর মহলের বাহবা কুঁড়ান। ২০দলীয় জোটের সর্বশেষ অবরোধে বিয়ানীবাজার পৌরশহরে বিএনপির সাথে পুলিশের দু’দফাসংঘর্ষ হয়। এতে বিশেষ ক্ষমতাআইনে দু’টি মামলা দায়ের হলে কপাল খুলে এস.আই জহিরুলের। প্রায় ৩ শতাধিক আসামীর মধ্যেগ্রেফতার হয় মাত্র ডজনখানেক আসামী। বাকীরা সবাই জহিরুলের সাথে সমঝোতায় গ্রেফতার এড়াতে সক্ষম হন। গতজুন মাসে আদালতে এ দু’টি মামলার অভিযোগপত্র দেয়া হয়। উভয় মামলা থেকেই বাদ পড়েন পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান রুমেলসহ অন্তত: অর্ধডজন আসামী। এস.আই জহিরুল একটি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হওয়ায় অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেয়া ও গ্রেফতার না করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আয় করেন ১৫লাখ টাকা। তিনি নিজে একটি চোরাই পালসার মোটর সাইকেল ব্যবহার করেন। যা স্থানীয় একজন যুবলীগ নেতা তার কাছে বিক্রি করেছেন। মোটর সাইকেলটি চোরাই হলেও একটি ভূয়া নাম্বার প্লেট লাগিয়ে দিব্যি ঘুরে বেড়ান জহিরুল। লাউতা ইউনিয়নের জলঢুপ কমলাবাড়ী এলাকায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে লন্ডনী বাদীর পক্ষ নিয়ে একটিচুরির মামলায় গ্রেফতার করেন বিবাদী আপন দুই বৃদ্ধ সহোদরকে। অথচ এই মামলায় কারাভোগকারী একজনের নামই ছিলনা বলে অভিযোগ আছে। মুল্লাপুর ইউনিয়নের আব্দুল্লাহপুর গ্রামে অসহায় মতছিন আলীর বাড়ী থেকে বের হওয়ার একমাত্র রাস্তাটি নিজে দাঁিড়য়ে থেকে বন্ধ করে দেন। অথচ ওই রাস্তা বন্ধ না করতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা ছিল। পাতন এলাকায় এক সন্তানের জননী এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করলে সূরতহাল প্রতিবেদন তৈরী করার নামে ওইমহিলার মরদেহ থেকে স্বর্ণের চেইনসহ কানের দুল খুলে কাউকেনা জানিয়ে নিজের কাছে রেখে দেন এস.আই জহিরুল। তাছাড়া তিনি ওয়ারেন্ট অফিসার হওয়ায় মাসিক তার উপরি আয় আরো ৩লাখ টাকা। পলাতকদের ওয়ারেন্ট গায়েব করে মাসিক ভিত্তিতে তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেন তিনি। কসবা গ্রামের তাজউদ্দিন (জি.আর মামলা নং ৪৪২) ওআঙ্গুরা মোহাম্মদপুর গ্রামের আতাউর রহমানের (জি.আর মামলা নং ৪০৩) গায়েব করার অভিযোগে থানায় তোলপাড় চলছে। তাছাড়া শহীদটিলা এলাকায় সেলিম উদ্দিন নামের এক জুয়া ব্যবসায়ীকে মদদ দেন এস.আই জহিরুল। সেখান থেকে তিনি দৈনিক ভিত্তিতে টাকা আদায় করেন। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে এস.আই জহিরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, সব অভিযোগ মিথ্যা। তিনি বেশী কাজ করেন, তাই হয়তো তার সমালোচনা বেশী।জহিরুলের এ সব অপকর্মের সংবাদ ইতোমধ্যেই বিভিন্ন দৈনিকে প্রশিত হয়েছে। বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নজরে এলে আলোচিত এস আই জহিরুলকে গতকাল মঙ্গলবার শাস্তিমূলক বদলী করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।
Discussion about this post