রায়হান ওয়াজেদ চৌধুরী
দ্যা সোসাইটি ফর ক্রিটিকাল লিগ্যাল স্টাইডিজ (এসসিএলএস ) আয়োজনে আন্তর্জাতিক আইনের ওপর দিনব্যাপী প্রফেসর ড.কবির উদ্দীন আহমেদ মেমোরিয়াল মুট কোর্ট কম্পিটিশন-১৭ গতকাল শনিবার (৩ জুন) চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন আইনের ( বাংলাদেশ – মায়ানমার) উপর বাদী এবং বিবাদী পক্ষ হিসেবে শুনানীতে অংশ নিয়ে যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন ও খণ্ডন করে। তিন সদস্য বিশিষ্ট প্রতি দল থেকে দুই জন করে আইনজীবী (ছায়া) শুনানিতে অংশ নেয়। এতে চ্যাম্পিয়ন হিসাবে বিজয়ী হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় টীম, রানার-আপ বিজয়ী হয়ছে নর্দান বিশ্ববিদ্যালয় টীম ।
ব্রিটেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় , কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় , আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্রগ্রাম , নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়, সাদার্ন বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় টীম অংশগ্রহনে নগরীর সাদার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ ক্যাম্পাসে সকাল ১০ টায় মুট কোর্ট কম্পিটিশন শুরু হয়ে বিকাল পাচটায় শেষ হয়।
উক্ত মুট কোর্ট কম্পিটিশান এর বিচারক হিসাবে দায়িত্বে পালন করেন কক্সবাজার জেলা জজ আদালত এর সহকারী জজ নুসরাত জামান, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ নাজেম উদ্দীন, চট্টগ্রাম জজ আদালত এর সহকারী জজ জুয়েল দেব, কুমিল্লা জেলা জজ আদালত এর সহকারী জজ মিসেস উজমা শুকরানা, সিরাজগঞ্জ জেলা জজ আদালত এর যুগ্ন জেলা ও দায়রা জজ মো সাইফুল ইলাহী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোকারামুস সাকলান, অ্যাডভোকেট তানভীর জামান চট্টগ্রাম মহানগর জজ আদালত এর সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট হোসেন আল আসকরি।
বিকালে পুরস্কার বিতরণএবং প্রফেসর ড.কবির উদ্দীন আহমেদ এর জন্য বিশেষ দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন সাদার্ন বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ এর ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. নুরুল মোস্তফা, আইন অনুষদের উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহিউদ্দীন খালেদ।
প্রধান অতিথি বলেন, আজকের এই মুট কোর্ট আমি উপভোগ করেছি। সত্যিই খুব অভিনন্দনজনক। এই মুট কোর্টে চর্চার মাধ্যমে পেশাগতভাবে আইন ও বিচার ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরা খুব ভাল করতে পারবে যার ফলে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। আজকের এই মুট কর্মশালা আগামীদিনে আপনাকে একজন ভালো আইনজীবী হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আমি আশা করি। একই সাথে এই আয়োজন একটি ম্যাসেজ, এর মাধ্যমে আমরা আমাদের চিন্তা- চেতনাকে রাষ্ট্রের অভিভাবকদের কাছে পৌঁছে।
অনুষ্ঠানের উদ্যেগক্তা দ্যা সোসাইটি ফর ক্রিটিকাল লিগ্যাল স্টাইডিজ সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জসীম উদ্দীন বলেন, “আইন ছাত্র-ছাত্রীরা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাগ্রহনের পাশাপাশি মুট কোর্ট সোসাইটিতে সুষ্ঠু অনুশীলন চর্চার মাধ্যমে শাণিত যুক্তি-তর্ক ও সাবলীল উপস্থাপনা আয়ত্ব করবে। তাদের এই মেধা আইন পেশায় গিয়ে সহজেই নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস।”
উল্লেখ্য, মুট কোর্ট হলো স্নাতক পর্যায়ের আইনের ছাত্রছাত্রীদের একটি বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতা কয়েকটি ধাপে অনুষ্ঠিত হয়। দলগুলো প্রথমে প্রস্তাবনা নিয়ে গবেষণা করে। বিষয়ের পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি সাজায় এবং রেফারেন্স দাঁড় করায়। সেগুলো পরে লিখিতভাবে প্রস্তাবনা আকারে জমা দেয় এবং প্রতিযোগিতার দিন পক্ষে বা বিপক্ষে সে মোতাবেক যুক্তি উপস্থাপন করে। প্রতিটির জন্য আলাদাভাবে মেমোরিয়াল বা লিখিত প্রস্তাবনা জমা দিতে হয়। আদালতে যেমন মামলা নিয়ে বাদী-বিবাদীর আইনজীবীরা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন, এখানেও পূর্ব নির্ধারিত বিষয়ে কল্পিত ঘটনা ও কয়েকটি চরিত্রের অপরাধ নিয়ে তাঁরা পরস্পরের মুখোমুখি হন।
Discussion about this post