চট্টগ্রামে এখনই সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনের সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা। বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) চট্টগ্রামে নতুন আদালত ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি একথা জানান।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আমি মনে করি, আপনাদের দাবির গ্রহণযোগ্যতা আছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী চাইছেন। শুধু চাওয়া আর দাবি হলে হয় না। এখানে অনেক প্রবলেম আছে। আমাদের এ বছরে সাতজন বিচারক অবসরে চলে যাবেন। চারজন বিচারক গুরুতর অসুস্থ।
এ সময় আইনজীবীরা না না বলে চিৎকার শুরু করেন।
এরপর প্রধান বিচারপতি বলেন, আমি তো বলছি আমি আপনাদের দাবির পক্ষে আছি। এখানে আইনমন্ত্রী আছেন, উনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধিত্ব করছেন। আপনাদের সেন্টিমেন্ট উনি শুনেছেন। আইনমন্ত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করবেন। অনেক বিষয় আছে, বিবেচনা করে অবশ্যই আপনাদের দাবির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এ সময় আবার আইনজীবীরা চিৎকার শুরু করলে প্রধান বিচারপতি বক্তব্য শেষ করেন।
প্রধান বিচারপতির বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সার্কিট বেঞ্চ বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবুল হাশেম গণমাধ্যমকে বলেন, প্রধান বিচারপতির বক্তব্যে আমরা হতাশ নই। এটি চট্টগ্রামবাসীর প্রাণের দাবি। অবশ্যই বাস্তবায়ন করা হবে। আমরা প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি ও আইনমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করব।
১৯৮২ সালের ১১ মে চট্টগ্রামে হাই কোর্টের একটি স্থায়ী বেঞ্চ প্রতিষ্ঠিত হয়। এইচ এম এরশাদের সামরিক শাসনামলে ১৯৮৬ সালের ১৭ জুন সামরিক ফরমানের ৪ (এ) ধারা সংশোধন করে স্থায়ী বেঞ্চকে সার্কিট বেঞ্চ (অস্থায়ী) করা হয়।
সংবিধান পুনরুজ্জীবনের পর সংবিধানের অনুচ্ছেদ-১০০ অনুসারে সার্কিট বেঞ্চের বিধান থাকায় চট্টগ্রামসহ দেশের ছয়টি সার্কিট বেঞ্চ বহাল থেকে যায়। পরে সংবিধানের অষ্টম সংশোধনীর ২(ক) অনুচ্ছেদ অনুসারে, ছয়টি সার্কিট বেঞ্চই আবার স্থায়ী বেঞ্চের মর্যাদা পায়।
১৯৮৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হাই কোর্ট বিকেন্দ্রীকরণ সংক্রান্ত অষ্টম সংশোধনীর ২(ক) অনুচ্ছেদটি বাতিলের আদেশ দিলে চট্টগ্রাম, রংপুর, যশোর, বরিশাল, কুমিল্লা ও সিলেটের হাই কোর্ট বেঞ্চগুলো ঢাকায় ফিরিয়ে নেওয়া হয়।
এরপর থেকে সার্কিট বেঞ্চ ফিরিয়ে দেয়ার দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন চট্টগ্রামের আইনজীবীরা। গত বছরের ডিসেম্বরে সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনের লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছিলেন আইনজীবী সমিতির নেতারা।
Discussion about this post