খুলনায় চাঁদাবাজির অভিযোগে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) নিরালা ফাঁড়ীর ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) সোহেল রানাসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত অন্যরা হচ্ছেন নগরীর সোনাডাঙ্গা ট্রাক স্ট্যান্ড কাঁচা বাজার সংলগ্ন মনসুর কমিশনারের বাড়ির ভাড়াটিয়া ইয়াছিন খাঁর স্ত্রী স্বপ্না আক্তার ওরফে রুনা (৩৫), নিরালা আবাসিক এলাকার (রোড নং-১৭, বাড়ি নং-২৯৫) আজিজুল ফকিরের স্ত্রী সীমা (২০), একই এলাকার রাজু শেখ (৩৯) ও সদর থানা সংলগ্ন গুলশান হোটেলের বোর্ডার (গ্রাহক) মো. আব্দুল হামিদ (৩২)।
সোমবার (১৫ আগস্ট) রাতভর অভিযান চালিয়ে সদর থানা পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। এসআই সোহেল রানা অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে খুলনা মেডেকেল কলেজ হাসপাতালে (খুমেক) ভর্তি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টায় খুলনা সদর থানায় প্রেস ব্রিফিং করা হয়।
খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃতরাসহ অজ্ঞাত পরিচয়ের কয়েকজন আসামি ১৪ আগস্ট রোববার দুপুর ১২টার দিকে মো. রমজান আলী নামক এক ব্যক্তিকে কৌশলে ডেকে নিয়ে নগরীর নিরালা আবাসিক এলাকার (রোড নং-১৭, বাড়ি নং-২৯৫) একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে স্বপ্না আক্তার ওরফে রুনা তাকে একটি রুমের মধ্যে নিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে বেরিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর সীমা, স্বপ্না, রাজু শেখ, মহিন আরা বেগম এবং স্থানীয় নিরালা পুলিশ ফাঁড়ীর আইসি (ইনচার্জ) এসআই সোহেল রানাসহ কয়েকজন ঘরে ঢুকে তাকে মারধর করে। এক পর্যায়ে সীমাকে নগ্ন করে তার পাশে দাঁড় করিয়ে এসআই সোহেল রানা মোবাইলে ভিডিও করে। পরে এসআই সোহেল রানা পুলিশ কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কথা বলে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে রমজান আলীর কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। না দিলে রেকর্ডকৃত ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার কথা বলে।
এ অবস্থায় রমজান আলী বাধ্য হয়ে তার স্ত্রীর মাধ্যমে এসআই সোহেল রানার নির্দেশনা অনুযায়ী খুলনা সদর থানা সংলগ্ন বিকাশ এজেন্ট আব্দুল হামিদের নম্বরে ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। আরও ১০ হাজার টাকা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি তাদের কবল থেকে ছাড়া পান।
এ ঘটনায় ওইদিনই রমজান আলী বাদী হয়ে এসআই সোহেল রানাসহ ৬ জনকে আসামি করে খুলনা সদর থানায় চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন। এছাড়া রফিকুল ইসলাম নামের আরও এক ব্যক্তিকে একই ফাঁদে ফেলে চাঁদা দেয়ার অভিযোগে তিনিও উল্লিখিত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
ওসি জানান, দু’টি মামলায় এসআই সোহেল রানাসহ ৫জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলা দু’টির তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) তাপস কুমার রায় জানান, তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
Discussion about this post