ডেস্ক রিপোর্ট: কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর, কক্সবাজারের চকরিয়া এবং দিনাজপুরের পার্বতীপুরে মাদকবিরোধী অভিযানকালে র্যাব ও পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে চারজন নিহত হয়েছেন। নিহতরা সবাই মাদক ব্যবসায়ী। তাদের নামে বিভিন্ন থাকায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব ও পুলিশ।
শুক্রবার দিবাগত রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত এ বন্দুকযুদ্ধে ঘটনাগুলো ঘটে।
কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ শামসুদ্দীন ওরফে শ্যাম (৩৬) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। নিহত শামসুদ্দীন ওরফে শ্যাম ভেড়ামারা উপজেলার ক্ষেমিরদিয়াড় বিশ্বাসপাড়া গ্রামের মৃত্যু কুব্বাত আলীর ছেলে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশীয় ওয়ান শুটারগান, দুই রাউন্ড গুলি ও ৫০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে।
শনিবার দিবাগত রাত পৌনে ৩টার দিকে ভেড়ামারা-রায়টা সড়কের বেকাপুল নামক স্থানে তিন রাস্তার মোড়ে সেতুর মুখে এ ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে।
ভেড়ামারা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, মাদকদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে একদল মাদক ব্যবসায়ী বেকাপুল নামক স্থানে তিন রাস্তার মোড়ে সেতুর মুখে অবস্থান করছে, এমন গোপন সংবাদ পেয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়।
পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। জবাবে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। পরে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একজনকে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কপপ্লেক্সে নেয়। সেখানেই দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহত শামসুদ্দীন ওরফে শ্যাম শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে ভেড়ামারা থানায় প্রায় আটটি মাদকের মামলা রয়েছে বলে জানান ওসি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ : সদর উপজেলায় র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ অজ্ঞাত পরিচয়ে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। তবে তাৎক্ষণিক নিহতের পরিচয় জানা যায়নি। ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, চার রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগাজিন ও ১১৭ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের মোল্লান মাথা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
র্যাব-৫ এর চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্প কমান্ডার সাঈদ আব্দুল্লাহ আল মুরাদ জানান, বড় ধরনের মাদকের লেনদেন হচ্ছে, এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের একটি দল রাত দেড়টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের মোল্লান মাথা এলাকায় অভিযানে যায়। এ সময় সেখানে ৫-৬ জনকে মাদক লেনদেন করতে দেখে চ্যালেঞ্জ করলে তারা র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়।
র্যাবও পাল্টা গুলি করে। এ সময় অন্যরা পালিয়ে গেলেও গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একজনকে আটক করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসকরা ওই ব্যক্তিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তবে নিহতের পরিচয় জানা যায়নি বলে জানান র্যাবের ওই কর্মকর্তা।
কক্সবাজার: চকরিয়ায় দুগ্রুপের ‘বন্ধুকযুদ্ধে’ মো. ইসমাঈল (৫২) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। ইসমাঈল তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক কারবারী ছিলেন। মাদক কারবার নিয়ে কোন্দলে প্রতিপক্ষের গুলিতে তিনি মারা যায়। ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশীয় এলজি, ২ রাউন্ড গুলি ও ৪৫০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার ভোর রাত ৩টার দিকে চকরিয়া-লামা সড়কের চকরিয়া উপজেরার ফাঁসিয়াখালী কুমারীব্রিজ এলাকায় এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
চকরিয়া থানার ওসি বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানান, ভোর রাত ৩টার দিকে চকরিয়া-লামা সড়কের ফাঁসিয়াখালীর কুমারী ব্রিজ এলাকায় মাদক কারবার নিয়ে দুগ্রুপের মধ্যে গোলাগুলি হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদককারবারি মো. ইসমাইলের মরদেহ উদ্ধার করে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে বলে জানান ওসি।
দিনাজপুর: দিনাজপুরের পার্বতীপুরে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আবদুর রহিম (৪৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। নিহত আবদুর রহিম পার্বতীপুর শহরের পুরনো বাজার রেলগেট এলাকার মৃত গোলাম নবীর ছেলে। ঘটনাস্থল থেকে একটি শুটারগান ও এক রাউন্ড গুলি, ১০০ পিস ইয়াবা ও ৫০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার দিনগত রাত ৩টার দিকে পার্বতীপুর-সৈয়দপুর সড়কের পার্বতীপুর উপজেলার বান্নিরঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পার্বতীপুর মডেল থানার ওসি হাবিবুল হক প্রধান জানান, রাত ৩টার দিকে বান্নিরঘাট এলাকায় দুই দল মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি ছোড়ে। এতে আবদুর রহিম গুলিবিদ্ধ হয়। এসময় অন্য মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়।
গুরুতর আহত অবস্থায় রহিমকে পার্বতীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এ/কে
Discussion about this post