বিডি ল নিউজঃ ঐতিহাসিক এমসিজিতে বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলতে নামার ২৪-ঘণ্টা আগে অস্ট্রেলিয়া ও নিজেদের দলের সম্ভাবনা ৫০-৫০ রয়েছে বলে জানিয়ে দিলেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাকালাম।
রবিবার তাসমানিয়ান ক্রিকেটের ইতিহাসে সম্ভবত সবচেয়ে বড় দিন। সেদিন বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে দুই তাসমানিয়ান রাষ্ট্র। একদিকে অস্ট্রেলিয়া, যারা চারবার বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া সহ মোট ৬ বার ফাইনাল খেলছে। তাদের কাছে বিশ্বকাপ ফাইনাল আরেকটি দিনের মতোই হওয়ার কথা। অন্যদিকে রয়েছে নিউজিল্যান্ড, যারা এবারই প্রথম ফাইনালে পৌঁছেছে, অপ্রতিরোধ্য ফর্মে রয়েছে।
বস্তুত, ভারত ও পাকিস্তানের দ্বৈরথে যে চূড়ান্ত চাপ থাকে, ঠিক সেরকম দ্বৈরথ এই দুই তাসমানীয় দেশের মধ্যে যুগ-যুগ ধরে চলে এসেছে। তার ওপর খেলা যেহেতু আবার অস্ট্রেলিয়ার ঘরের মাঠে, তাই ফাইনালে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাত্রাও কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি প্রতিযোগিতাতেই গ্রুপ পর্যায়ের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডরে মাটিতে কিউয়িদের কাছে হেরে গিয়েছে মাইকেল ক্লার্কের নেতৃত্বাধীন অজি-বাহিনী। ফলে, নিজেদের মাঠে হওয়া ফাইনাল ম্যাচে এখন তারা বদলা নেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছে।
উপরন্তু, এই ফাইনাল ম্যাচটিই অজি অধিনায়কের জীবনের ‘ফাইনাল’ একদিবসীয় ম্যাচ হতে চলেছে। কারণ তিনি রবিবারের পরই একদিনের ক্রিকেট থেকে অবসর নেবেন বলে স্থির হয়েছে। তাই অধিনায়ককে বিদায়ী শুভেচ্ছা হিসেবে বিশ্বকাপ জয় উপহার দিতে চাইছে দল।
অন্যদিকে, কিউয়িদের হারানোর কিছুই নেই। অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাকালামের নেতৃত্বে দল অত্যন্ত আগ্রাসী ও ইতিবাচক ক্রিকেট খেলে ফাইনালে উঠেছে। এখনও পর্যন্ত তারা এই টুর্নামেন্টে অপরাজেয়। স্বাভাবিকভাবেই তারা এই ধারা বজায় রাখতে জানপ্রাণ লড়িয়ে দেবে, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। মোট ৬ বার সেমিফাইনালে উঠলেও এই প্রথম তারা ফাইনালে পৌঁছেছে। দলের মধ্যে এখন ‘নাউ অর নেভার’ মনোভাব রয়েছে। ফলে, তাসমানিয়ান মহারণের জ্বরে এখন কাঁপছে ওসিয়েনিক মহাদেশ।
কিউয়ি অধিনায়ক ম্যাকালাম ভালই জানেন, তাঁর ‘ব্ল্যাক ক্যাপস’-বাহিনী এখন যে ফর্মে রয়েছে, এটাই ক্লার্ক-নেতৃত্বাধীন ক্যাঙারুদের হারানোর সেরা সুযোগ। অথচ, রিচার্ড হ্যাডলি থেকে গ্লেন টার্নার, মার্টিন ক্রো থেকে স্টিফেন ফ্লেমিং— অতীতে বহু বিশ্বখ্যাত ক্রিকেটারকে উপহার দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার এই প্রতিবেশি রাষ্ট্র।
এদিন ম্যাকালাম জানান, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে মহারণে তিনি নিজের দল ও অস্ট্রেলিয়ার জয়ের সম্ভাবনার হার ৫০-৫০ দেখছেন। ব্রেন্ডন বলেন, ‘এটা আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় মূহূর্ত। এই টুর্নামেন্টের সফর দারুন কেটেছে। আমরা প্রথম থেকেই বিশ্বজয়ের স্বপ্ন দেখেছিলাম, এখন তার থেকে একটা ধাপ দূরে আছি।’
গ্রুপ-পর্যায়ে নিজেদের তুলনামূলক ছোট মাঠে খেলার পর এমসিজি-তে অজিদের বিরুদ্ধে কি টিকতে পারবেন তাঁরা? জবাবে ম্যাকালাম বলেন, ‘মাঠের বিশালায়তন নিয়ে অনেক চর্চা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, এই মাঠে আমরা জিততে পারব না। মনে করিয়ে দিতে চাই, আমরা সারা বিশ্বে অনেক বড় বড় মাঠে খেলেছি ও জিতেছি।’ তিনি যোগ করেন, আরব আমিরশাহির মাঠও তুলনায় এমসিজির মতোই বড়। যদিও, এমসিজির মতো আবহাওয়া সেখানে নেই। ম্যাকালাম মনে করেন, এখনকার ব্যাটগুলিতে যে ধরণের স্ট্রোক খেলা যায়, তাতে মাঠের সাইজ কোনও ফ্যাক্টর নয়।
দলের সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে এদিন অজি-বাহিনীর জন্য যথেষ্ট সম্ভ্রম ধরা পড়ল কিউয়ি অধিনায়কের গলায়। বললেন, ‘অস্ট্রেলিয়া আমাদের হারাতেই পারে। তবে আমরাও ভাল প্রদর্শন করার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী।’ রবিবারের মেগা-ফাইনালে তাঁরা সর্বস্ব শক্তি নিংড়ে দেবেন বলে সমর্থক ও দেশবাসীকে আশ্বস্ত করলেন ম্যাকালাম। বললেন, ‘কাল একটা বড় হার্ডল টপকাতে হবে। চির-প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে সবকিছু উজাড় করে দেবে ছেলেরা।’”এবিপি আনন্দ
Discussion about this post