বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতীয় টিভি চ্যানেলের (স্টার জলসা, স্টার প্লাস ও জি বাংলা) সম্প্রচার বন্ধে জারি করা রুলের ওপর হাইকোর্টে চূড়ান্ত শুনানিতে আইনজীবী নিয়োগ করা হয়েছে।
স্টার জলসা ও স্টার প্লাস কর্তৃপক্ষ আইনজীবী হিসেবে সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরুকে নিয়োগ দিয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া ভারতীয় চ্যানেল জি বাংলার পক্ষে ব্যারিস্টার সামসুল হাসান শুনানি করবেন। ভারতীয় ওই তিনটি টিভি চ্যানেলের বাংলাদেশে পরিবেশনকারী প্রতিষ্ঠান এ নিয়োগ দিয়েছে।
স্ট্রার গ্রুপের পক্ষে ওকালতনামা নিয়ে বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে আইনজীবী আবদুল মতিন খসরু প্রথম দিন শুনানি শুরু করেছেন। আদালতের নির্ধারিত শুনানির আজ ছিল তৃতীয় দিন। আগামী ১৯ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করেছেন আদালত।
এ সময় রিট আবেদনকারীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো.একলাছ উদ্দিন ভূইয়া ও সৈয়দা, অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু, সহাকরী অ্যাটর্নি জেনারেল পূরবী রানী শরমা ও পূরবী শাহা উপস্থিত ছিলেন।
জি বাংলার বাংলাদেশের পরিবেশনকারী প্রতিষ্ঠান ন্যাশন ওয়াইড মিডিয়া লিমিটেড এবং স্টার জলসা ও স্টার প্লাসের বাংলাদেশের পরিবেশনকারী প্রতিষ্ঠান ডিজি জাদু ব্রডব্যান্ড লিমিটেড।
‘পাখি প্রেমে প্রাণ বিসর্জন’ শিরোনামে ২০১৪ সালের ২ আগষ্ট দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট আবেদন করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা শাহীন আরা লাইলির করা এক রিট আবেদনে ২০১৪ সালের ১৯ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করেন।
রুলে ভারতীয় ওই তিন টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। রুলে তথ্য ও স্বরাষ্ট্র সচিব, বিটিআরসি চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়।
রিট আবেদনে বলা হয়, দেশের ঘরে-ঘরে বাড়ছে ভারতীয় ধারাবাহিক নাটকের জনপ্রিয়তা। এসব সিরিয়ালপ্রীতির কারণে দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো ক্রমেই দর্শক হারাচ্ছে, দেশ হারাচ্ছে নিজস্ব সংস্কৃতি। কিশোরী-তরুণীদের ফ্যাশনেও এর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এই সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে জনস্বার্থে রিট আবেদন করা হলো।
দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, স্টার জলসার ‘ বোঝে না সে বোঝে না’ সিরিয়ালের ‘পাখি’র প্রেমে প্রাণ গেল এক যুবক ও মেয়ে শিশুর। পাখি চরিত্রে রূপদানকারী তরুণীর পোশাকের অনুকরণে এবার ‘পাখি’ নামের একটি পোশাক দেশের ঈদবাজারে জমজমাট ব্যবসা করেছে। ঈদে চড়া মূল্যের এ জামা নতুন স্ত্রীকে কিনে দিতে না পারার ব্যর্থতায় আত্মহত্যা করেছে প্রান্তিক শ্রেণির এক যুবক। ঈদের আগের দিন বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের নন্দতেঘরী গ্রামে শাহীন নামের ওই যুবক আত্মহত্যা করে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পাখির মরণকামড় থেকে ছাড় পায়নি দশ বছরের শিশুও। পাখি নামের পোশাক না পেয়ে অভিমানে ঈদের দু’দিন আগে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে নূরজাহান নামে দ্বিতীয় শ্রেণির এক স্কুল শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে।
Discussion about this post