স্বর্ণসহ গ্রেফতারকৃত মালয়েশিয়ার তিন নাগরিককে জিজ্ঞাসাবাদে বিমানবন্দর থানা পুলিশ এসব তথ্য পাওয়া যায়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন-হে ওই খং (৩৮), জোহারি বিন হারুন (৪১) এবং আজওয়ান বিন সালেহিন (২১)।
গত শনিবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে ৪৫ কেজি স্বর্ণসহ এদের আটক করে ঢাকা কাস্টমস হাউজ। রোববার ঢাকা কাষ্টমস হাউজের দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
এদিকে, ওই স্বর্ণ চোরাচালানে সোমবার (১২ অক্টোবর) রাত আটটার দিকে সুলতান মাহমুদ নামে আরেক জনকে আটক করেছে পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও বিমানবন্দর থানা সূত্র জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে স্বর্ণ চোরাচালানে দুই জন মানি একচেঞ্জ ব্যবসায়ী ও দুই জন বিমানবন্দরের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী নাম পাওয়া গেছে।
ব্যবসায়ী দু’জনই বিমানবন্দর থানা এলাকায় মানি এক্সচেঞ্জ’র ব্যবসার পাশাপাশি স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত। আর বিমানবন্দরের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর মধ্যে একজন মালি, অপরজন ট্রলার ম্যান পদে চাকরি করেন।
তারা দীর্ঘদিন ধরে কাজের ফাঁকে বিমানবন্দরে স্বর্ণ চোরাচালনে সহযোগিতা করে আসছে। চোরাই পথে আসা বিমানবন্দর থেকে স্বর্ণ কৌশলে বাইরে বের করার দায়িত্ব ছিল তাদের ওপর।
এসব স্বর্ণ ভারতে পাচার করার জন্যই আনা হয়েছিলো বলে জানায় তদন্ত সূত্র। এছাড়া এর সঙ্গে একটি প্রভাবশালী চোরাচালান চক্র জড়িত আছে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তারা।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃদ আসামিরা জানান, রাজু ও সাকিব নামের দুই প্রবাসী স্বর্ণের বারগুলো বাংলাদেশের আনার জন্য তাদের দিয়েছিলেন।
তদন্ত কর্মকর্তা বিমানবন্দর থানার উপ-পরিদর্শক কবিরুল ইসলাম বলেন, রিমান্ডে আসামিদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী চোরাচালানের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। তদন্তের স্বার্থে এর বেশি বলা যাচ্ছে না।
ঢাকা কাস্টমস হাউসের সহকারী কমিশনার (প্রিভেনটিভ) মো. শহিদুজ্জামান সরকার বলেন, এই মামলায় তদন্তের জন্য পুলিশ আমাদের কাছে চাওয়া সব তথ্য দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটির পুরো ভিডিও ফুটেজ দেখেছি। সেখানে কিছু অস্বাভাবিক গতিবিধিও লক্ষ্য করা গেছে।
বিমানবন্দর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল উদ্দিন জানান, আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চোরাচালানের সঙ্গে আরও যারা জড়িত তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, নগদ টাকা ও বিমানের টিকিটের বিনিময়ে আসামিরা এসব স্বর্ণ বহন করে বাংলাদেশে আসতে রাজি হয়। চুক্তি অনুযায়ী স্বর্ণের বারগুলো রাজধানীর উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের রোড-৩ এর ৩২ নম্বর বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল বলেও উল্লেখ করা হয়। বাড়িটি কার এবং কে থাকতেন সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।
এদিকে, স্বর্ণ চোরাচালান রোধে ও বিদেশিদের ওপর নজরদারি বৃদ্ধির জন্য কাস্টমস কর্তৃপক্ষের প্রিভেন্টিভ দলের সদস্যদের সমন্বয় একটি স্পেশাল টিম গঠন করা হয়েছে।
এই টিমের সদস্যরা বিভিন্ন দেশ থেকে আসা পর্যটকদের ক্লোজ মনিটরিং করবে বলে জানান কাস্টমস হাউসের সহকারী কমিশনার শহিদুজ্জামান সরকার।
Discussion about this post