ধর্ম, বর্ণ, জাতি, সম্প্রদায় বা ভাষার নামে ভোট চাওয়াকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।
বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক এ দেশটির ৫ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে আজ সোমবার (২ জানুয়ারি) গুরুত্বপূর্ণ এ রায় এলো। যে ৫ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সেখানে ভোটের মাঠে ধর্মীয় বিশ্বাস ও গোত্রীয় বিষয়গুলো বিশেষ ভূমিকা রাখে।
ভারতের প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুর নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের সাত সদস্যের বেঞ্চ এ রায় দিয়েছেন।
আগামীকাল মঙ্গলবার অবসরে যাওয়ার মাত্র একদিন আগে প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এ রায় দিয়েছেন।
আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেছেন, সংবিধানে যে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা হয়েছে নির্বাচনে সে চর্চা অব্যাহত রেখে তা বজায় রাখতে হবে। মানুষের সঙ্গে সৃষ্টিকর্তার যে সম্পর্ক সেটি ব্যক্তি বিশেষের পছন্দের উপর নির্ভর করে। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে রাষ্ট্রেরন সম্পৃক্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
সাত সদস্যের বেঞ্চের তিন বিচারপতি অবশ্য এ রায়ের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেছেন। তাদের যুক্তি, এমন রায় গণতন্ত্রকে বাস্তবের চেয়ে তত্ত্বীয় বিষয়ের দিকে ঠেলে দেবে।
আদালত বলেছেন, নির্বাচিত কোনো জনপ্রতিনিধির ভূমিকা ধর্মনিরপেক্ষ হওয়া উচিৎ। নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ধর্মের কোনো ভূমিকা নেই, এটি সম্পূর্ণ অসাম্প্রদায়িক একটি প্রক্রিয়া। রাষ্ট্রকে ধর্মের সাথে মেশানোর অনুমতি সংবিধান দেয়নি।
উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সালের হিন্দুত্ব সম্পর্কিত এক রায়ের পুনর্বিবেচনার ক্ষেত্রে নতুন করে ভাবনা-চিন্তা শুরু হয়৷ তাতে সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, ধর্মের নামে ভোট চাওয়াটা কি স্বাভাবিক, নাকি তা দুর্নীতি হিসেবে ধরা হবে? বিচারপতির এমন প্রশ্নের পর আজ সোমবার ঐতিহাসিক রায়ে নির্বাচনকে ধর্ম নিরপেক্ষ প্রক্রিয়ার ভিত্তিকে আরও শক্ত করতে নয়া নির্দেশিকা জারি করল সুপ্রিম কোর্ট৷
Discussion about this post