জাতীয়করণ করা ৩১৫টি বেসরকারি কলেজের প্রায় ২০ হাজার শিক্ষককে ক্যাডারভুক্ত না করার দাবি জানিয়েছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি। ররিবার (০৬ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সংগঠনের নেতারা।
জাতীয়করণ করা শিক্ষকরা সম্প্রতি তাদের ক্যাডারভুক্ত করতে সরকারের কাছে দাবি জানানোর প্রেক্ষিতে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি সংবাদ সম্মেলন করে এ পাল্টা দাবি জানায়।
সংবাদ সম্মেলনে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সভাপতি আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার, মহাসচিব মো. শাহেদুল খবির চৌধুরীসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বলেন, মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ মেধা ও মান নিশ্চিত করে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়া হয়। তাই এই ক্যাডারের মর্যাদা, সুনাম ও শৃঙ্খলা ব্যাহত করার উদ্যোগ নেওয়া হলে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি মেনে নেবে না।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সরকার দাবি না মানলে আন্দোলন করা হবে। তবে কী ধরনের আন্দোলন এবং কবে নাগাদ শুরু করা হবে তা জানাতে চাননি নেতারা।
আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বলেন, বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে উত্তীর্ণ ছাড়া অন্য কোনও পথে আসা নন-ক্যাডার শিক্ষকদের শিক্ষা ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না।
তিনি জানান, গত জুলাই মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেসব উপজেলায় সরকারি স্কুল ও কলেজ নেই, সেসব উপজেলায় একটি করে স্কুল ও একটি কলেজ জাতীয়করণের ঘোষণা দেন। এর আগে ২০১৩ সালে ২৬ হাজার রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণা দেন। প্রধামন্ত্রীর এসব জনবান্ধব কাজকে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি স্বাগত জানায়।
আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বলেন, জাতীয়করণ করা বেসরকারি শিক্ষকদের ক্যাডারভুক্ত করা হলে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের নতুন প্রজন্মের মেধাবী শিক্ষকরা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তখন বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার কোনোভাবেই মেধাবীদের আকর্ষণ করতে পারবে না। এছাড়া বর্তমান শিক্ষা ক্যাডারে ১৫ হাজার শিক্ষক সংখ্যালঘু অংশে পরিণত হবে, যা ক্যাডারের শৃঙ্খলায় যে কোনও সময় বিপর্যয় নিয়ে আসতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি জানিয়ে বলা হয়, ২০১০ সালের শিক্ষানীতি অনুয়ায়ী বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকা জরুরি। শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চাকরি সংক্রান্ত বিধি-বিধান থাকবে, যাতে কর্মকমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ করা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বার্থ সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকে।
জাতীয়করণ করা কলেজের শিক্ষকরা নন-ক্যাডার হিসেবে বিবেচিত হবেন এবং তাদের জন্য নিয়োগ, পদোন্নতি পদায়ন ও চাকরির অন্যান্য শর্তসহ নতুন বিধিমালা করতে হবে। কোনোভাবেই ক্যাডার কর্মকর্তাদের জ্যেষ্ঠতা, পদোন্নতি, ও পদায়নসহ কোনও সুবিধার অন্তরায় হবে না।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যেই কলেজ জাতীয়করণের ক্ষেত্রে অনুশাসন দিয়েছেন- ‘জাতীয়করণকৃত কলেজের শিক্ষকগণ স্ব স্ব কলেজ থেকে অন্যত্র বদলি হতে পারবেন না।’ যা জাতীয়করণ করা কলেজ শিক্ষকদের ক্যাডারভুক্ত না করারই বার্তা বহন করে।
Discussion about this post