জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ছাড়া ৬ মাস পর মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বিটিআরসি।
তিনি জানান, প্রত্যেক মোবাইল অপারেটর এনআইডি ডাটাবেজের সঙ্গে সংযুক্ত থাকছে এবং বিটিআরসিতে একটি সেন্ট্রাল ভেরিফিকেশন সিস্টেম থাকবে। যেখানে সমন্বিত ডাটা থাকবে।
‘একজন গ্রাহক রিটেইলারের কাছে গিয়ে এনআইডি, জন্ম তারিখ এবং ফিঙ্গার প্রিন্ট দেবে। রিটেইলার অপারেটিং সিস্টেমের মাধ্যমে প্রথমে সেন্ট্রাল সিস্টেমে ডাটা পাঠাবে, সেন্ট্রাল সিস্টেম থেকে ক্লিয়ারেন্স নিয়ে এনআইডিতে যাবে।’
এমদাদ উল বারি বলেন, এনআইডি থেকে ভেরিফাইড হয়ে জানা যাবে সঠিক কিনা? সঠিক না হলে কেনা না? যখন ভেরিফাইড হয়ে আসবে তখন সেই ডাটা সেন্ট্রাল সিস্টেমে জমা হবে। তারপরই ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হয়েছে বলে ধরা হবে।
‘এই ভেরিফিকেশন সিস্টেম নতুন সিম নিবন্ধন, পুনঃনিবন্ধন, অ্যাক্টিভেশন-ডিঅ্যাক্টিভেশন এবং রি-অ্যাক্টিভেশনে ব্যবহার হবে।’
তিনি বলেন, যুক্তিসঙ্গত কারণে যাদের এনআইডি নাই বা অন্য কোনো কারণে এনআইডি নিতে পারেননি, ৬ মাসের জন্য তাদের সিম অ্যাক্টিভ করে রাখা হবে, কিন্তু ৬ মাসের মধ্যে এনআইডি উপস্থাপন করতে না পারলে ৬ মাস পর সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
জাতীয় ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তার স্বার্থে গ্রাহক তথ্য সংগ্রহ করে সিমকার্ড নিবন্ধন ও পুনঃনিবন্ধনে আঙ্গুলের ছাপ পদ্ধতির উদ্যোগ নেয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ।
বিটিআরসি কার্যালয়ে এই পদ্ধতির উদ্বোধন করেন প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। বৃহস্পতিবার থেকে সারা দেশে এই কার্যক্রম শুরু হবে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এমদাদ উল বারি বলেন, অনিবন্ধিত বা অবৈধভাবে নিবন্ধিত সিম দিয়ে কত ধরনের ঘটনা ঘটছে। ২০১০ সালের জুন মাসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে বিটিআরসি, এনআইডি এবং অন্যান্য অপারেটরসহ তা রোধ করার জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছিল।
তার মধ্যে কয়েক দফা সিম নিবন্ধনের চেষ্টা করা হয়েছিলো। গত বছর এনআইডি ডাটাবেজ তৈরির পর বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশনসহ একটা সিস্টেম স্থাপন করতে উদ্যোগ নিলেও কারিগরী, আইনি জটিলতায় হয়নি। প্রতিমন্ত্রী দায়িত্ব নেওয়ার পরে আবারও এই উদ্যোগে গতি আসে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বারি বলেন, ভবিসতে শুধু সিম নয়, অন্যান্য কার্যক্রমে এই এনআইডির সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকবে। এজন্য আপামর জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে সেন্ট্রাল ডাটাবেজ রিচ করা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় গত ২১ অক্টোবর পরীক্ষামূলকভাবে বায়োমেট্রিক পদ্ধতির উদ্বোধন করেন। এরপর নভেম্বর থেকে মোবাইল অপারেটরগুলো কার্যক্রম শুরু করে।
পরীক্ষামূলকভাবে শুরুর সময় কাস্টমার কেয়ার পর্যায়ে বায়োমেট্রিকের ডিভাইস ছিল ২ হাজার ২৬০টি, এখন সারা দেশে রিটেইলার পর্যায়ে ৮১ হাজার ৫০০টি ডিভাইস রয়েছে।
মহাপরিচালক জানান, ভবিষ্যতে ১ লাখ ২ হাজার ডিভাইস স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। এসব ডিভাইস বিভিন্ন অপারেটরের মধ্যে শেয়ার হবে। প্রায় পৌনে তিন লাখ রিটেইলারের মধ্যে ১ লাখ ২ হাজার ডিভাইস শেয়ার হবে।
পাইলট প্রকল্পের অভিজ্ঞতাতায় ৫০ শতাংশের কম সাফল্য থাকলেও নিরলস প্রচেষ্টায় মঙ্গলবার পর্যন্ত ৯০ শতাংশের উপরে সাফল্য এসেছে।
অনুষ্ঠানে বিটিআরসি চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ এবং বিভিন্ন মোবাইল অপারেটরের প্রধান নির্বাহী ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
Discussion about this post