রোকনুজ্জামান কুষ্টিয়া প্রতিনিধিঃমহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতা বিরোধী অপরাধী জামায়াত শিবির’র অঙ্গ সংগঠন রাজাকার, আলবদর, আলসামস বহিনীর নৃশংস নরহত্যা ও মা’বোনের সম্ভ্রমহানির দায়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আদালতের দেয়া রায় কার্যকর ও জামাত শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে গড়ে উঠা উত্তাল জন¯্রােত গণজাগরন মঞ্চের ৩য় বর্ষ পালন উপলক্ষে কুষ্টিয়ায় পতাকা মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টায় কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচীর অংশ হিসেবে শহরের পোরসভার বিজয় উল্লাস চত্বর থেকে জাতীয় পতাকাবাহী বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন শেষে থানামোড়(বকচত্বরে) সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, গণজাগরণের সংগঠক আমিরুল ইসলাম, শাজাহান আলী, শাহিন সরকার, মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক শাজাহান আলী’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, কুষ্টিয়া জেলা বাসদ’র আহ্বায়ক কমরেড শফিউর রহমান শফি, সিপিবি জেলা সভাপতি কমরেড রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জেলা আহ্বায়ক মুনির মাহমুদ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নেত্রী কুহেলী ফাতেমা ফেরদৌস ইতি, প্রগতিশীল নাগরিক পরিষদের সেক্রেটারী জেনারেল তপন রুশদী প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, সরকার যেখানে জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধের প্রতিশ্র“তি দিয়েছিল, এখন নানাভাবে ইনিয়ে বিনিয়ে জামায়াতকে পূন:প্রতিষ্ঠা দেয়ার চেষ্টা করছে, আবারও প্রশ্ন উঠেছে সর্বজন চিহ্নিত শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযম, সাইদীদের কিভাবে লঘু দণ্ড হয়, সেটা ভাবিয়ে তুলেছে। এরকম আশংকায় আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, সব ধরনের আপষের সম্ভাবনাকে নষ্যাত করে কিভাবে রাজপথ থেকে যুদ্ধাপরাধীদের প্রাপ্য শাˉি— আদায় করে নেয়া যায়। এবং গণজাগরন মঞ্চ সব বাধা উপেক্ষা করে, যুদ্ধাপরাধী সংগঠন জামায়াতকে নিষিদ্ধের দাবীও রাজপথ থেকে আদায় করে নেবে।
সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কালক্ষেপন করে ঝুলিয়ে রেখেছিল। এখন আবার নিজামীর রায়ের মধ্যদিয়ে বিচারকে গতিশীল করার চেষ্টা হচ্ছে। গণজাগরণ মঞ্চ মনে করে যে, সরকারের বোধদয় হয়েছে। নিশ্চয় সরকার উপপলব্ধি করেছে যে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে কালক্ষেপন ও রাজনীতি থেকে জামায়াতকে নিষিদ্ধের যে অনিহা তা ভুল ছিল। আমাদের ধারণা সরকার সেই জায়গা থেকে সরে এসেছে। বাংলাদেশে রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজ চলবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়। অথাৎ বাংলাদেশের যারা রাজনীতি করবে সে সরকারী দল বা বিরোধী দল কিংবা যে কোন দল তাদেরকে অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় রাজনীতি করতে হবে, এর বাইরে যাবার সুযোগ নেই। যারা যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ নিয়েছে এদেশে তাদের রাজনীতি করার কোন অধিকার নেই। একই সাথে রাজনীতির নামে দেশব্যাপী যে নৈরাজ্য ও সহিংসতার মাধ্যমে নৃসংশ হত্যাকান্ড সংঘটিত করে গোটা জাতিকে আজ আতংকিত করে তুলেছে এবং কোমল মতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনকে জিম্মি করে ফায়দা লুটতে অপপ্রয়াস চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধেও দেশের সকল দেশপ্রেমিক মানুষ জাগরিত হয়ে উঠবে এবং খুব শীঘ্রই তাদের মহাণ মুক্তিযুদ্ধের রক্তে রঞ্জিত মাটি থেকে উৎখাত করা হবে।
Discussion about this post