বিডি ল নিউজঃ
স্ত্রীর করা মামলা স্বামীর কারাগারে যেতে হলো। তাই স্ত্রী ও তার পরিবারের প্রতি ভীষণ রাগ-ক্ষোভ। কারাগারে বসেই ওই স্বামী হয়তো চিন্তা করেছিলেন কোনো মতে জামিনে বেরোতে পারলেই মজাটা দেখাবো। ঠিক তাই হলো। জামিনে মুক্তি পেয়ে দেরি করলেন না। আদালত চত্বরেই স্ত্রী ও তার পরিবারের লোকদের বেদম পেটালেন স্বামীসহ মুক্তি পাওয়া তার ১১ স্বজন। এতে আদালত থেকে পাওয়া তাদের জামিন তাৎক্ষণিক বাতিল হয়ে যায়। ফলে বাড়ি যাওয়ার পরিবর্তে আবারও যেতে হয় কারাগারে।
ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত চত্বরে। এ ঘটনায় আদালত পাড়াসহ মামলার দু’পক্ষের এলাকাই ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
স্বামী পক্ষের হামলায় এ সময় স্ত্রীরপক্ষের ৩ জন আহত হয়। পরে স্বামী পক্ষের ১১ জনের মধ্যে স্বামীসহ ৮ জনের জামিন বাতিল করে আবারও কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক আব্দুল মতিন।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইমরান হোসেন চৌধুরী জানান, জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার বোলদিয়ারা গ্রামের শামসুল হকের মেয়ে ইসমাতুন নাহারের সঙ্গে ২০১২ সালের ২৭ নভেম্বর একই উপজেলার গরুরা গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে শাহেরুল ইসলামের বিয়ে হয়।
এ সময় উপহার হিসেবে পাত্রপক্ষকে নগদ দুই লাখ টাকা ও সংসারের অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দেয়া হয়। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন যৌতুক হিসেবে আরও দুই লাখ টাকার জন্য স্ত্রী পক্ষের কাছে দাবি করতে থাকে।
টাকা না পাওয়ায় ইসমাতুন নাহরের ওপর নির্যাতন চালায় এবং এক পর্যায়ে তাকে তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে আপোস মিমাংসার জন্য বেশ কয়েকবার বৈঠক হলেও তা ব্যর্থ হয়।
এদিকে টাকা ছাড়া ইসমাতুন নাহারকে তার স্বামীর বাড়িতে তুলে নিতে অস্বীকৃতি জানালে অবশেষে ইসমাতুন নাহার বাদী হয়ে তার স্বামী, শ্বশুর, শ্বাশুড়ি, দেবর, ননদসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে যৌতুক ও নির্যাতনের বিচার চেয়ে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে ২০১৪ সালের ২ এপ্রিল একটি মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় স্বামীপক্ষ মঙ্গলবার দুপুরে আদালত থেকে জামিন পায়। জামিন পেয়েই তারা আদালত চত্বরে স্ত্রী ইসমাতুন নাহার, তার ভাই মোসলেম উদ্দিন ও মমিনুল ইসলামের ওপর হামলা চালায়।
এতে তারা গুরুতর আহত হলে বিষয়টি আদালতের বিচারককে জানানো হয়। এরপর বিচারক বিবাদীপক্ষের ১১ জনের মধ্যে ৮ জনের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
Discussion about this post