কায়রো (মিশর) থেকে: শরিয়তপুরের রিপন আর পাবনার জাকারিয়া। ভালো নেই দু’জনের কেউই। মিশরের কারাগারে অন্ধকারে দিন কাটছে তাদের। পৃথিবীর প্রাচীন সপ্তমাশ্চর্যের একটি পিরামিড আর স্ফিংসের দেশে প্রবেশ করতে গিয়ে এ দু’জনের কাছেই বরং আশ্চর্য বনে যান এদেশের ইমিগ্রেশন পুলিশ।
পর্যটক ভেবে তাদের স্বাগত জানাতে গিয়েই বিপত্তিতে পড়েন দেশটির ইমিগ্রেশন পুলিশ।
মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট মেশিনে দিতেই রিড করে ফেলে যাবতীয় তথ্য। তবে ভিসার পেজটি ভেরিফাই করতে গিয়েই বিপত্তির শুরু।
ইমিগ্রেশন অফিসার ভেবেছিলেন, বোধহয় কম্পিউটার নেটওর্য়াক বা সিস্টেমে কোন ক্রটি হয়েছে। কিন্তু না। যত গন্ডগোল ভিসাতে। প্রাচীন সপ্তমাশ্চর্যের দেশের লোকেরাই আশ্চর্য বনে যান বাংলাদেশের পাসপোর্টে ইজিপ্টের ভিসার সুক্ষ জালিয়াতি দেখে।
ফলাফল এ দু’জনেরই ঠিকানা হয় দেশটির কারাগার। কেবল রিপন আর জাকারিয়াই নয়। তার মতোন অনেকেই জাল ভিসা নিয়ে ধরা পড়ছেন দেশটিতে। যে কারণে সাধারণ পর্যটক হলেও জাতীয়তা বাংলাদেশি। এই পরিচয়ই বাড়তি প্রশ্ন আর নিঁখুত পর্যবেক্ষণের শিকার হতে হচ্ছে বাংলাদেশিদের।
মুসলিম অধ্যুষিত সত্বেও দেশটির মানুষ সম্পর্কে এক ধরনের নিরব নেতিবাচক বার্তা যাচ্ছে দেশটির ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছে।
শরিয়তপুরের নড়িয়া থানার ইশরকাঠি গ্রামের ইউনূস পেদার ছেলে রিপন মিয়া আর পাবনার চাটমোহরের মাঘেরপাড়া গ্রামের মৃত গোলাম মোস্তফার ছেলে জাকারিয়া।
আদম পাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে জাল ভিসা নিয়ে এ দেশে প্রবেশ করতে গিয়ে ধরা পড়েন ইমিগ্রেশন কতৃর্পক্ষের হাতে।
জনপ্রতি দেড় লাখ টাকার বেশি খরচ করে ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় দেশটিতে এসে এখন দিন কাটছে অন্ধকার কারাগারে।
এভাবে জাল ভিসায় প্রবেশ করতে গিয়ে দেশটির প্রচলিত আইনের মুখোমুখি হয়ে কাউকে কারাদণ্ড ভোগ করে কাউকে বা বিমানবন্দর থেকেই ফিরতি উড়োজাহাজে তুলে দেওয়া হয়।
তবে কারাগারে গেলে শুরু নতুন বিপত্তির। কারণ বিষয়টি তখন জানানো হয় দূতাবাসে। সেখান থেকে সময় করে কারাগারে আটক ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করতে যান দূতাবাসের কর্মকর্তারা।
সেই তথ্য যাচাই বাছাইয়ের জন্যে দেশে পাঠানো হলেও দেশ থেকে ভেরিভিকেশন রিপোর্ট আসাও দীর্ঘসূত্রিতা ব্যবস্থার মধ্যে পড়ে।
এভাবে দিনের পর দিন বিনা বিচারে থেকে মুক্তি পেলেও দেশে ফেরার ভাড়া না থাকায় বাড়তি সময় জেলে থাকতে হয় অনেককে।
দেশ থেকে ফিরতি উড়োজাহাজ ভাড়াসহ আনুষাঙ্গিক খরচের অর্থ না পাঠানো পর্যন্ত জেলেই সময় কাটে অসহায় বাংলাদেশিদের।
যোগাযোগ করা হলে কায়রোয় বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর (রাজনৈতিক) শফিকুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, দেশের জাল ভিসা চক্রের সঙ্গে প্রবাসী একটি চক্রের মাধ্যমে অনেকেই এ দেশে প্রবেশের চেষ্টা করে এয়ারপোর্টে ধরা পড়েন। যা এখানে বাংলাদেশের ইমেজকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
সুত্র বাংলানিউজ
Discussion about this post