আমরা lawyer রা কেনো পিছিয়ে গেলাম, তরুণ lawyer রা এ দেশ কে একসময় শাসন করেছেন, ড. কামাল যখন সংবিধান রচনা করেছেন তখন তার বয়স কত ছিলো, তিনি যখন প্রথম মন্ত্রী হন তখন তার বয়স কত ছিলো, আজ থেকে ৪০ বছর আগের কথা। ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম ছিলেন সংবিধান প্রণেতা, স্বাধীনতা ঘোষনা পত্রের রচায়িতা, তখন তার বয়স কত ছিলো, সেই সময় তারা শুধু দেশ শাসনই করেন নি বরং দেশের জন্মও দিয়েছে।
আজকে আইনজীবীরা সেই অবস্থায় নেই, তারা রাজনীতিতে আসবেন কিভাবে, তাদের পেশাতেই তো আসাটা দুরুহ হয়ে পড়েছে। একটা নবীন আইনজীবী যখন এই যে পেশা প্রথম গ্রহণ করে তখন এই পেশায় টিকে থাকার জন্য তাদেরকে অনেক সংগ্রাম করতে হয়। জুনিয়রশীপ বলতে যে সিস্টেম টা আছে তা আজ পর্যন্ত দাঁড়ায় নি।
একজন সিনিয়রের পিছনে তাকে চাকরের মত ঘুরতে হয়। ইতি মধ্যে সিনিয়রের ২০-২৫ জন জুনিয়র রয়ে গেছে, সেখানে চান্স পাওয়াও অনেক কষ্টের ব্যাপার, চান্স পাওয়া গেলেও তাকে কোন কাজ করানো হয় না। বড় lawyer রা যেহেতু রাজনীতি করেন তারা তাদের দল ভারী করার জন্য প্রচুর জুনিয়র দলে নিয়ে নেয়। তারা জুনিয়রদের কোন কাজেও লাগায় না; তারা শুধু কোর্টের বহরের অংশীদার হিসেবে থাকেন। এবং তাদের পেশাগত উৎকর্ষ সাধনের বিধিবদ্ধ কোন সংস্থা বিদ্যমান নেই।
যদিও বার কাউন্সিলের কাজ এটা কিন্তু বার কাউন্সিল কোন policy নির্ধারণ করতে পারেন নি। জুনিয়রদের শুধু সনদ দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। এরপর তারা মামলায় কিভাবে নিয়োজিত থাকবেন, পেশায় কিভাবে নিয়োজিত থাকবেন এটাই হলো বড় কথা। তারা মৃত্যুর পর কত টাকা পেলো এটা পেশাজীবী হিসেবে বড় কোন কল্যাণ নয়। তার পেশায় টিকে থাকতে পারছে কিনা এবং পেশাগত উন্নতি সাধনের ব্যবস্থা বার কাউন্সিলই করে দিবে। এটাতো কেউ বাসা থেকে করে আনতে পারে না। এবং personal capacity তেও এটা সম্ভব না। তারা বই পুস্তক পড়েও এই প্রাকটিকাল দিকটা করতে পারবে না। এটার জন্য যা করা উচিত ছিল যারা সিনিয়র lawyer বা প্রতি বছর আমরা সনদ রিনিউ করতে বার কাউন্সিলে যখন আসি তার জন্য একটা বাধ্যতামূলক নিয়ম করে দেওয়া উচিত যে অন্তত বছরে দশটা থেকে বিশটা আইনজীবী কে ভরণ পোষণ করিয়ে এরকম একটা সনদ শপথ করে বার কাউন্সিলে তার সনদ তাকে রিনিউ করা। এরকম যদি করানো হয়ে থাকে তাহলে আমার মনে হয় প্রায় দশ থেকে পনেরো হাজার সিনিয়ার আছে এরা যদি প্রতি বছর দশ বা পনেরো হাজার এর মধ্যে থেকে একজন করেও করে তাহলেও তারা প্রতিষ্ঠা লাভ করবে।
তাদেরকে রিক্সা ভাড়া গাড়ি ভাড়া দিতে হয়, তাদের এ পেশায় টিকে থাকায় conveyance তো দূরের কথা দুপুরের খাবারও ঠিক মত খেতে পারে না। অন্য দিকে রয়ে গেছে প্রলোভন বিভিন্ন ব্যাংক বেসরকারি সংস্থা এনজিও চাকরি সেখানে গেলেই এসির রুমে বসে অন্যন্য কাজ করতে পারে। কিন্তু কোর্টে এসে তারা কাজ তো করা দূরের কথা বরং মান সম্মান হারানোর মত একট অবস্থা দাড়িয়ে যায়। কারন সেখানে পেশকার থেকে শুরু করে পিওন দালালের সাথে মিশে যে ভাষায় আচারন করতে হয় তা কোন মর্যাদাপূর্ন জুনিয়রের পক্ষে সম্ভব না।
এমনি কি যারা বিদেশ থেকে ব্যারিস্টার করে আসছে তারা সে পোশাষ আশাক চাল চলনের মর্যাদার নীতি বোধ ধারনা করে আসসে একটা status ধারণ করে আসছে এখানে এসে যখন দেখে নর্দমার পঙ্কিল অবস্থার মত বিশেষ করে লোয়ার কোর্টেও ম্যাজিস্ট্রেট আদলত গুলো সেখানে ছেড়ে দেওয়া হয় লুটেরা শাসনের মত কিংবা দালাল হওয়ার মত একটা ব্যবস্থাপনা সেখানে ভাল থাকার মত টিকে থাকার মত রুচি কোন আইনজীবীর থাকেনা। এটা কিন্তু একটা জুনিয়ারের ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দেওয়াটা আমাদের বার কাউসিলের তো দূরের কথা আমাদের জাতিরও ছেড়ে দেওয়া ঠিক নয়। জাতিকেও তার মেধবী সন্তানদের কে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এবং আইনজীবী বলেন আর রাজনীতিবিদ বলেন গোড়াতেই তারা মার শিখে যায় ও টাউট বাটপার এর সাথে মিশে যায়, তাহলে সে ভালো আইনজীবী কিভাবে হবে।
ভালো আইনজীবী তো পরের কথা ভালো আইনজীবী না হলে ভালো রাজনীতিবীদ কিভাবে হবে। ভালো রাজনীতিবীদ হলে না সে দেশের সেবক কিভাবে হবে। আগেই তো গোড়া নষ্ট করে ফেলছে। আমার আকুল আবেদন থাকবে সবার প্রতি এ পেশাকে ঠিক করতে হলে গোড়ায় হাত দিতে হবে। এই জায়গাটাকে অর্থাৎ জুনিয়র সিস্টেমটাকে একটা বিধি বদ্ধ প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে এবং বাধা দিতে হবে সিনিয়রদেরকে যে তাদের ফিস থেকে জুনিয়রদের ফিস কনট্রিবিউট করতে হবে। এটা বার কাউন্সিলের আইন দ্বারই নির্ধারণ করতে হবে।
(২০১৩ সালে বিডিলনিউজ কর্তৃক গৃহীত ড. তুহিন মালিকের ইন্টারভিউ এর আলোকে তার কিছু কথা)
Discussion about this post