আইনের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, মুসলিম শাসন আমলেও আইন পেশার প্রচলন ছিল।বিশেষ করে মুঘল আমলে আইন পেশাজীবীদের প্রচলন পরিলক্ষিত হয়।তখনকার আইন পেশা এত উন্নত না হলেও দেখা যায় মুফতীরা বিচারকার্যে বিচারকদের সাহায্য করতেন।তাদেরকে আধুনিক যুগের এটর্নী জেনারেলের সাথে তুলনা করা যায়।এর আরেকটু পরে দেখা যায় মামলার পক্ষসমূহ পেশাদার আইনজ্ঞ দ্বারা মামলা পরিচালনা করতেন এবং তাদেরকে আইনজীবী বলা হতো।বলা যায় মুসলিম শাসকদের আমলে পেশাদার আইনজীবীর বিকাশ ঘটে।তখনকার সময়ে কোন আইনজীবী সমিতি ছিলনা।ফিকহে ফিরোজশাহী এবং ফতওয়ায়ে আলমগীরিতে আইনজীবীর দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে স্পষ্ঠ বিবরণ রয়েছে।বাদশা শাহজাহানের আমলে সর্বপ্রথম সরকারী আইনজীবী নিয়োগ করা হয় এবং আইনপেশাকে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দেওয়া হয়েছে। সম্রাট আওরঙ্গজেবের সময় প্রতিটি জেলায় সরকারী আইনজীবী নিয়োগ করা হয়,তাদেরকে বলা হত উকিল- ই শরয়ী।তাদেরকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিতেন এবং কখনো কখনো প্রধান কাজী বিয়োগ দিতেন।এতে বুঝা যায় আইনপেশা ইসলামের অন্তরায় নয় বরং সত্যিকার আইনপেশা ইসলামের ইতিহাসের একটি স্বীকৃত পেশা এবং মহান পেশা। অধিকাংশ ইসলামী পন্ডিত অন্যান্য পেশার ন্যায় আইনকে বৈধ পেশা হিসেবে সমর্থন করেছেন।ইসলাম একটি বিজ্ঞানময়,শাশ্বত,পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান।মানবজীবনের এমন কোন দিক নেই যা ইসলামে আলোচিত হয়নি।ইসলামী দুনিয়ার সর্বজন শ্রদ্ধেয় ইমামে আজম হযরত আবু হানিফা (রঃ) মাযহাবের ফেকাহের কিতাব সমূহে ওকালতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে।এ কিতাব সমূহের মধ্যে-হেদায়া,শরহে ফেকায়া এবং সর্বজন গ্রাহ্য ফতোয়ার কিতাব ফতোয়ায়ে আলমগিরী, ফতহুল কাদির বিখ্যাত কিতাব সমূহে ওকালত সম্পর্কে বিস্তারিত রয়েছে।আইনপেশা মানবাধিকার এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।
লেখকঃ সামশুদ্দিন ইলাহী,শিক্ষানবিশ আইনজীবী,চট্টগ্রাম জজকোর্ট
Discussion about this post