জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের প্রশিক্ষণ দেবে জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থা লিগ্যাল এইড। আগামী ২০ জুনের (মঙ্গলবার) মধ্যে স্থানীয় পর্যায়ে ৬৮টি প্রশিক্ষণ বাস্তবায়ন করার জন্য বলা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জেলা আইনগত সহায়তা প্রদান কমিটিকে এই প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করতে হবে। প্রশিক্ষণের বিষয়বস্তু হচ্ছে ‘সরকারি আইনি সেবার সাফল্য’ ও ‘বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির কেন্দ্রস্থল জেলা লিগ্যাল এইড অফিস’।
সূত্র জানায়, জেলা লিগ্যাল এইডে ‘সরকারি আইনগত সহায়তার অনুকরণীয় দৃষ্টান্তের ম্যানুয়াল’ শীর্ষক এক প্রশিক্ষণ কর্মশালা আগামী ৮ জুলাই থেকে অনুষ্ঠিত হবে।
জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) কাজী ইয়াছিন হাবিব স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইউএনএইড (UN.AID) এর অর্থায়নে পরিচালিত জাস্টিস ফর অল প্রোগ্রাম প্রকল্পের সহায়তায় আগামী ৮ জুলাই ‘সরকারি আইনগত সহায়তার অনুকরণীয় দৃষ্টান্তের ম্যানুয়াল’ শীর্ষক এক প্রশিক্ষণ কর্মশালা ঢাকাস্থ হোটেল বেঙ্গল ব্লু-বেরিতে হবে।
এ প্রশিক্ষণে অংশ নিতে দেশের ১৯টি জেলার লিগ্যাল অফিসারদের মনোনীত করা হয়েছে। কার্যকর ও সেবা বান্ধব লিগ্যাল এইড অফিস গড়ে তুলতে কর্মকর্তাদের জন্য এ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এছাড়াও ‘সরকারি আইনি সেবার মানোন্নয়নে সহায়তা প্রদান’ প্রকল্পের আওতায় সম্পৃক্ত জনবলকে বিদ্যমান মামলা জট নিরসনে বিকল্প বিরোধ সহায়তা বিষয়ে দক্ষ করতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এদিকে জাতীয় আইনগত প্রদান সংস্থার পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. মোস্তাফিজুর রহমানেই সই করা ওই স্মারকে বলা হয়, দেশের স্থানীয় পর্যায়ে ৬৮টি প্রশিক্ষণ বাস্তবায়ন করতে হবে। জেলা আইনগত সহায়তা প্রদান কমিটিকে আগামী ২০ জুনের মধ্যে এ প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
অনুষ্ঠিতব্য ওই প্রশিক্ষণের বিষয়বস্তু হবে ‘সরকারি আইনি সেবার সাফল্য’ ও ‘বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির কেন্দ্রস্থল জেলা লিগ্যাল এইড অফিস`। জেলা লিগ্যাল এইড অফিসারসহ দুই জন ওই প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষক থাকবেন।
প্রতিটি অফিসে মোট ৪০ জনকে এ প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। এর মধ্যে থাকবেন-জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির সদস্য, জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি, পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি, জেলা আইনজীবী সমিতির প্রতিনিধি, প্যানেল আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী, উপজেলা চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল, সহায় সম্বলহীন, অসমর্থ বিচারপ্রার্থী মানুষকে সরকারি খরচে আইনি সহায়তা দিতে ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন-২০০০’ প্রণয়ন করে।
২০০০ সালে তৎকালীন শাসনামলে আইনটি প্রণয়ন করা হয়। ওই আইন অনুসারে `জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা` গঠন করা হয়। রাজধানীর ১৪৫, নিউ বেইলি রোডে এ সংস্থার প্রধান কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে।
এর ব্যাপ্তি সুপ্রিম কোর্ট, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত নেয়া হয়। বিভিন্ন কমিটি গঠন, প্রতিটি জেলা জজ আদালতে এর কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। এতে দরিদ্র-অসচ্ছল ও অসহায় জনগণ বিচারপ্রাপ্তিতে সুবিধা পাচ্ছেন।
দেশের নিম্ন আদালত, সর্বোচ্চ আদালতে এখন এ সেবার মাধ্যমে সুবিধা পাচ্ছেন বিচারপ্রার্থীরা। নানা প্রচার, প্রচারণা, সেমিনার ও কর্মশালা আয়োজনের মধ্য দিয়ে এ সেবা বিষয়ে জনসচেতনতা দিন দিন বাড়ছে। এ সেবা কার্যক্রম সংশ্লিষ্টদের জন্য নানা উদ্যোগও নেয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার রয়েছে নিজস্ব ওয়েবসাইট। এ ওয়েবসাইটে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান বিষয়ে বিস্তারিত সব তথ্য পাওয়া যায়।
Discussion about this post