জামালপুরে জোরপূর্বক গর্ভপাত ঘটানোর অভিযোগে আইনজীবী স্বামীর বিরুদ্ধে তারই স্ত্রী মোছা. হাসিনা খাতুন একটি মামলা দায়ের করেছেন।
জেলার ইসলামপুর থানায় গতকাল শনিবার (১৮ নভেম্বর) গভীর রাতে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলায় অভিযুক্ত আইনজীবী মো. মোজাম্মেল হক জামালপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ইসলমাপুর উপজেলার গাইবান্ধা ইউনিয়নের বটচর গ্রামের আব্দুল হকের ছেলে অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হকের সাথে দুই বছর আগে একই এলাকার হাসান আলীর মেয়ে মোছা. হাসিনার খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের টাকার জন্য স্ত্রী হাসিনার খাতুনের ওপর নির্যাতন চালায় স্বামী অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হক ও তার পরিবারের লোকজন। দিন দিন এ নির্যাতনের মাত্রা বাড়তে থাকে। এরই এক পর্যায়ে হাসিনা খাতুন অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এতে স্বামী অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হক ক্ষিপ্ত হয়। গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে স্ত্রী হাসিনার খাতুনকে চাপ দেয়। এতে স্ত্রী রাজি না হলে কৌশল খুঁজতে থাকে অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হক ও তার পরিবারের লোকজন।
এরই এক পর্যায়ে গত ১৬ নভেম্বর অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হক তার দুলা ভাই ভুলুর সহায়তায় হাসিনা খাতুনকে ডেকে চিকিৎসার কথা বলে জামালপুরে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে একটি চিকিৎসা কেন্দ্রে জোরপূর্বক গর্ভপাত ঘটাতে অতিমাত্রা ঔষধ সেবন করায় স্বামী অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হক। এতে হাসিনা খাতুন অসুস্থ্য হলে ওই চিকিৎসা কেন্দ্রেই রাতযাপন করে তারা। স্ত্রী হাসিনার খাতুন বেশী মাত্রায় অসুস্থ্য হলে পরদিন ১৭ নভেম্বর চরপুঁটিমারী ইউনিয়নের বেনুয়ার চর বাজার সংলগ্ন জনৈক হাসান আলীর বাড়িতে রেখে স্বামী অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হক ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়। এরই একপর্যায়ে ১৮ নভেম্বর ভোরে স্বামীর খাওয়ানো ঔষধের বিক্রিয়ায় স্ত্রী হাসিনা খাতুনের গর্ভপাত ঘটে। এ ঘটনা ওইদিন রাতে হাসিনার খাতুনের দরিদ্র পিতা হাসান আলী ইসলামপুর থানা পুলিশকে জানায়। পরে একদল পুলিশ ওই রাতেই অসুস্থ্য হাসিনা খাতুনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে হাসিনার খাতুন বাদী হয়ে জোরপূর্বক গর্ভপাত ঘটানোর অভিযোগে স্বামী অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হককে প্রধান আসামি করে ৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
এ ব্যাপারে অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হকের মুঠো ফোনে বারবার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ইসলামপুর থানার ওসি শাহীনুজ্জামান খান জানান, ঘটনার পরিপেক্ষিতে মামলা হয়েছে। ভিকটিমের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়াও জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করতে ভিকটিমকে আদালতেও নিয়ে যাওয়া হবে এবং ঘটনার তদন্ত চলছে।
Discussion about this post