(প্রিয়.কম) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য জয়নাল হাজারীকে হাইকোর্টের দেওয়া খালাসের রায় বাতিল করেছে সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে পুনরায় হাইকোর্টে শুনানির জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন এ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। জয়নাল হাজারীর পক্ষে শুনানি করেন এ্যাডভোকেট আবদুল বাছেত মজুমদার।
খুরশীদ আলম পরে বলেন, “আপিল বিভাগ হাজারীর খালাসের রায় বাতিল করেছে। এখন হাই কোর্টে তার করা আপিলের পুনঃশুনানি হবে।”
এর আগে ২০১১ সালের ১৫ ডিসেম্বর দুদকের দায়ের করা এই মামলায় জয়নাল হাজারীর বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতের দেওয়া সাজার রায় বাতিল করে রায় দেন হাইকোর্ট।
গত তত্ত্ববাধায়ক সরকারের সময়ে ২০০৭ সালের ২ অক্টোবর জয়নাল হাজারির বিরুদ্ধে ১ কোটি ১২ লাখ ৯৭ হাজার ৩১ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এনে আওয়ামী লীগ নেতা হাজারীর বিরুদ্ধে এই মামলা করেন দুদকের উপ পরিচালক সফিকুর রহমান ভূইয়া।
২০০৮ সালের ২৭ নভেম্বর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত এ মামলার রায়ে হাজারীকে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা; অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়। তার সম্পদ থেকে এক কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করারও আদেশ হয়।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আপিল করেন হাজারী। ২০১১ সালের ৫ ডিসেম্বর হাই কোর্ট তার আপিল মঞ্জুর করে সাজার রায় বাতিল করে।
দুদক এর বিরুদ্ধে ২০১২ সালের ১৪ এপ্রিল লিভ টু আপিল করে, যার শুনানি শেষে সোমবার সর্বোচ্চ আদালত আদেশ দিল।
১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে সাংসদ থাকাকালে জয়নাল হাজারীর বিরুদ্ধে ব্যপক দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের অভিযোগ ওঠে। হাজারীর কর্মকাণ্ডের কারণে তখনকার আওয়ামী লীগ সরকারকেও সমালোচনার মুখে পড়তে হয়।
২০০১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ১৬ অগাস্ট রাতে যৌথবাহিনীর (বিডিআর-পুলিশ) তল্লাশির সময় পালিয়ে ভারতে চলে যান ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের তখনকার সাধারণ সম্পাদক হাজারী।
দীর্ঘ আট বছর দেশের বাইরে থাকার পর ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় এলে দেশে ফেরেন তিনি। অর্থ পাচারের একটি মামলায় জামিন চাইতে গেলে ওই বছর ১৫ এপ্রিল আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান।
পলাতক অবস্থায় হাজারীর বিরুদ্ধে মোট ২৭টি মামলা হয়, যার মধ্যে পাঁচটিতে সাজার রায় হলেও উচ্চ আদালত তাকে সবগুলোতেই খালাস দেয়।
Discussion about this post