ফরিদ মিয়া, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি, বিডি ল নিউজঃ টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার বনমালি গ্রামে গোপালপুর থানার নির্দেশ অমান্য করে প্রতিবেশির জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে একই গ্রামের রফিকুল ইসলামে বিরুদ্ধে। জমি রক্ষায় আদালতের সরনাপন্ন হয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। থানা পুলিশের নির্দেশ অমান্য করে উল্টো ওই জমিতে ঘর তৈরিসহ বাদিকে প্রাণনাশের হুমকি ধামকি দিচ্ছেন। ফলে জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় পালিয়ে বেড়াচ্ছে বাদি নাসির উদ্দিন।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, নগদাশিমলা ইউনিয়নের বনমালি গ্রামের মৃত হোসেন আলী সরকারের পুত্র মো. নাসির উদ্দিন (৬০) প্রায় ২০বছর পূর্বে বনমালি মৌজায় তাঁর নিজের বাড়ির সংলগ্ন ৪২২ নং দাগের ১শতাংশ জমি ক্রয় করে স্থাপনা নিমার্ণসহ ভোগ দখল করে আসছেন। কিন্তু সম্প্রতি প্রতিবেশি মৃত দারোগ আলি ছেলে মো. রফিকুল ইসলাম (৩৫) ঐ জায়গাটি জোর দখল নেওয়ার চেষ্টা করে এবং নাছির উদ্দিনকে জীবননাশের হুমকি দেয়। এ ঘটনায় নাসির উদ্দিন রফিকুল ইসলাম গংদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত টাঙ্গাইল এ গত ১২ নভেম্বর ২০১৪ইং তারিখে নিজের জীবনের নিরাপত্তা ও জমি জবর দখল মুক্ত রাখার জন্য একটি মামলা দায়ের করেন। (মামলা নং-৬৯০/২০১৪)। মাননীয় আদালত গোপালপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও গোপালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে উল্লে¬¬খিত জমির বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। পরে গোপালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলামের নির্দেশে থানার এএসআই অসীম কুমার পাল গত ১৬ নভেম্বর সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বাদি মো. নাসির উদ্দিন ও বিবাদী রফিকুল ইসলাম গংদের প্রতি নোটিশ জারিসহ উক্ত ভূমির উপর স্থিতিবস্থা বজায় রাখার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। পর দিন আদালতে তিনি তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করেন। কিন্তু রফিকুল ইসলাম গংরা থানা পুলিশের নির্দেশ অমান্য করে ১৮ নভেম্বর উক্ত ভূমিতে অবৈধ ভাবে দখল করে ঘর তৈরির করেন। এসময় নাসিরের মালিকাধীন টিনের তৈরি ১২হাত একটি রান্না ঘর, রান্না ঘরে রাখা সিসার হাড়ি-পাতিল, ডাকসেলফ, একটি টয়লেট, মুরগী রাখার ঘর ভাংচুর করেন, জোর পূর্বক ৫০টি বাঁশ কেটে নেন, ৩০টি বিভিন্ন প্রজাতির বনজ ও ফলদ বৃক্ষের চারা উত্তোলনসহ একটি নারিকেল গাছ কেটে ফেলেন, ২৫টি মুরগীসহ বসত ঘর হতে অন্যান্য আসবাপত্র ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র লুটপাটসহ দুই লাখ টাকার ক্ষতিসাধন করে। তাকে এবং স্ত্রী নিলুফা ইয়াসমিন (৫০) খুন করার উদ্দেশ্যে ধাওয়া করলে তারা দৌড়িয়ে পালিয়ে কোন রকম ভাবে জীবন রক্ষা করে। ওই দিনের পর হতে নাসির উদ্দিন খেয়ে না খেয়ে প্রাণরক্ষায় পালিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন।
এব্যাপারে অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে জমির নকশা অনুযায়ী ওই ১শতাংশ জমি আমার ভাগে পড়ছে। আর আমাকে থানা থেকে কোন নোটিশ দেয়া হয়নি। তাছাড়া আমি নাসির উদ্দিনের কোন জায়গা জমি দখল ও ক্ষতিসাধনসহ প্রাণনাশের হুমকি ধামকি দেইনি। এগুলো সব বানোয়াট, মিথ্যা কথা। গোপালপুর থানার এএসআই অসীম কুমার পাল বলেন, ‘আমি বাদি এবং বিবাদী উভয়কেই নোটিশ জারিসহ উক্ত ভূমির উপর স্থিতিবস্থা বজায় রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। আর আমি যেদিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি, সে দিন ওই জমিতে কোন স্থাপনা ছিলনা। তবে নাসিরের একটি ঘর ভাঙ্গা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেছি। যদি নোটিশ জারির পর রফিকুল ঘর নিমার্ণ করে থাকে তাহলে সে আইন অমান্য করেছে।’
Discussion about this post