যুক্তরাষ্ট্রের ‘ড্রিমারস প্রকল্প’ বাতিলে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের আবেদনের শুনানি করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। ড্রিমার প্রকল্পের মাধ্যমে শিশুকালে বাবা-মায়ের সঙ্গে যাওয়া অবৈধ অভিবাসীদের সুরক্ষা দেওয়া হয়ে থাকে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
শৈশবে বাবা-মায়ের সঙ্গে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানো অভিবাসীদের কাজের অনুমতি দিতে ‘ড্রিমার’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল ওবামা প্রশাসন। এর আওতায় কয়েক লাখ অবৈধ অভিবাসীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো থেকে বিরত ছিল হোয়াইট হাউস। তাদের যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে কাজের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এর মাধ্যমে মূলত তরুণ অনিবন্ধিত অভিবাসীদের সুরক্ষা দিতে চেয়েছিল ওবামা প্রশাসন। এ কর্মসূচির দাফতরিক নাম ‘ডেফারড অ্যাকশন ফর চিলড্রেন অ্যারাইভাল’ (ডিএসিএ)। এ কর্মসূচির সুযোগ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস,পড়াশোনা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ পান প্রায় ৭ লাখ তরুণ। এই তরুণদের বলা হয় ‘ড্রিমার’। তবে গত সেপ্টেম্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্পটি সমাপ্তির ঘোষণা দেয় ট্রাম্প প্রশাসন। এরপর আদালতের নির্দেশে সরকারের ঘোষণা স্থগিত হয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে মামলা লড়ে যাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন।
খবরে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা সোমবার বলেন, কেন্দ্রীয় আদালতের একটি আদেশের বিরুদ্ধে সরকারের আবেদনের বিষয়ে আমরা কোনও শুনানি করবো না। গত মাসে ডিএসিএ প্রকল্প ট্রাম্পের উদ্যোগ বন্ধে আদালত ওই আদেশ দিয়েছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৮ লাখ অবৈধ তরুণকে দেশ থেকে বিতাড়নের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য ২০১২ সালে এই প্রকল্প অনুমোদন করেছিল ওবামা প্রশাসন। ড্রিমারস নামে পরিচিত এই প্রকল্প বন্ধের চেষ্টা করে যাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। তবে দেশের অভ্যন্তরের বিক্ষোভ ও ডেমোক্র্যাটদের বিরোধিতার কারণে ট্রাম্প তেমন সুবিধা করতে পারছেন না। ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগে ট্রাম্প এই প্রকল্প বাতিলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
ড্রিমার প্রকল্প নিয়ে মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তা বহাল হবে বলে গত ৯ জানুয়ারি আদেশ দেন সান ফ্রান্সিসকোর একটি আদালত। ওই সময় সেখানে আপিল করার পরিবর্তে ট্রাম্প প্রশাসন সরাসরি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিল। এরপর দেশটির সুপ্রিম কোর্ট এই আদেশ দিল।
হোয়াইট হাউসের একজন মুখপাত্র রাজ শাহ বলেন, ‘ডিএসিএ পরিষ্কারভাবে বেআইনী।’ কংগ্রেস বার বার স্পষ্টভাবে বাতিল করার পরও জেলা জজ একতরফাভাবে কর্মসূচি চালু রাখার ব্যাপারে নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পর রাজ শাহ বলেন, আমরা আপিল বিভাগে এই মামলার দ্রুত শুনানির চেষ্টা করছি। দরকার পড়লে সুপ্রিম কোর্টেও যাওয়া হবে। সেখানে আমরা জিতবো বলে আশা করছি।
সুপ্রিম কোর্ট তার আদেশে বলেছেন, তারা আশা করেন মামলাটি নিম্ন আদালতে দ্রুত নিষ্পত্তি হবে। বিষয়টি সান ফ্রান্সিসকোর একটি আপিল আদালতে এখনও বিবেচনাধীন রয়েছে।
Discussion about this post