ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ)’র আইন বিভাগের আয়োজনে “জুডিশিয়াল এ্যাক্টিভিসম ও জুডিশিয়াল সেলফ-রেস্ট্রেইয়ন্ট” শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের কনফারেন্স হলে শনিবার (২৯ পেরিল) ডিআইইউ উপাচার্য অধ্যাপক ড.কে এম মোহসীনের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে ভারতের কর্ণাটক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের প্রাক্তন ডীন অধ্যাপক ড.এস এস ভিশওয়াশওয়াইরা মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
অধ্যাপক ড.এস এস ভিশওয়াশওয়াইরা তাঁর বক্তৃতায় গণমানুষের অধিকার রক্ষায় ভারতীয় আদালতের ভূমিকা এবং “জুডিশিয়াল এ্যাক্টিভিসম ও জুডিশিয়াল সেলফ-রেস্ট্রেইয়ন্টের সঙ্গে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, ক্ষমতার পৃথকীকরণ, আইনের শাসন, জনস্বার্থে মামলা, জুডিশিয়াল রিভিউ প্রভৃতির সম্পর্ক তুলে ধরেন। এসময় তিনি ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগে কলিজিয়াম সিস্টেমের ত্রুটি ও বিচারকদের ভূমিকার ওপর আলোকপাত করেন। তিনি বলেন বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা না গেলে শুধু জুডিশিয়াল এক্টিভিজমের মাধ্যমে মানুষের অধিকার সমুন্নত রাখা সম্ভব নয়। এসময় তিনি এ সংক্রান্ত ভারতীয় ও বৃটিশ মামলার উদাহরণ ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে তুলে ধরেন।
ডিআইইউ’র আইন বিভাগের সমন্বয়ক রাইসুল ইসলাম সৌরভের সঞ্চালনায় সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড.মো.রহমত উল্লাহ্, আইন বিভাগের অধ্যাপক ড.এম ইকরামুল হক ও ড.রিদওয়ানুল হক প্যানেলিস্ট হিসেবে আলোচনায় অংশ নেন। অন্যান্যের মধ্যে ডিআইইউ কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড.মইনুল ইসলাম, প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, ডিআইইউ’র কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড.শওকত আরা হোসেন, ডিআইইউ’র আইন বিভাগের চেয়ারপারসন মিলি সুলতানা, শিক্ষকমণ্ডলী, বিচারকবৃন্দ, আইনজীবী, গবেষক, মানবাধিকারকর্মী, এনজিওকর্মী ও আইনের ছাত্র-ছাত্রীরা সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।
পরে অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ্ রাষ্ট্রের প্রধান তিন অঙ্গের মধ্যে ঐকতানের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। অধ্যাপক ড. এম ইকরামুল হক তাঁর বক্তৃতায় জুডিশিয়াল এক্টিভিজমের উপাদান থেকে শুরু করে এ সংক্রান্ত বাংলাদেশী মামলার উদাহরণ তুলে ধরেন। অধ্যাপক ড. রিদওয়ানুল হক জুডিশিয়াল এক্টিভিজমের অপব্যবহার রোধে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং রাস্ট্রের তিন অঙ্গের ক্ষমতার সমন্বয়ে চেক এ্যাণ্ড ব্যালান্স স্থাপন করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, সহ-সভাপতি, বোর্ড অব ট্রাস্টিস (বিওটি), ডিআইইউ তাঁর উদ্বোধনী বক্তৃতায় বলেন ডিআইইউ’র আইন বিভাগ বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মধ্যে পথিকৃৎ, যার সূচনা হয়েছিল একজন প্রথিতযশা আইন শিক্ষাবিদের হাতে এবং ডিআইইউ নিয়মিতভাবে জ্ঞানের চর্চা অব্যাহত রাখতে ও ছাত্র-ছাত্রীদেড় উৎসাহিত করতে এ ধরণের অনুষ্ঠান আয়োজন করে থাকে। তিনি বলেন আজকের সেমিনার থেকে শুধু ছাত্র-ছাত্রীরাই উপকৃত হবে না; অন্যান্য পেশাজীবীরাও উপকৃত হবেন। বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশের-ই জুডিশিয়াল এ্যাক্টিভিসমের ওপর তাৎপর্যময় ইতিহাস রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। ক্রান্তিকালীন সময়ে বিচার বিভাগ বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় আইনের শাসন সমুন্নত রাখতে তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে সেমিনারটিকে সাফল্যমণ্ডিত করায় ডিআইইউ’র বিওটি’র সভাপতি ডা. এস কাদির পাটোয়ারী সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। শেষে অংশগ্রহণকারীরা মূল প্রবন্ধের ওপর মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করে।
-সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
Discussion about this post