ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মেঘনা-গোমতী ও মেঘনা সেতুতে অবৈধভাবে টোল আদায়ের অভিযোগে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করা হয়েছে। মেসার্স ইনফার্টেক কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লি. নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গত ১৯ অক্টোবর সিএনএস টেকনোলজি নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ এনে রিট পিটিশন দায়ের করেছে। এদিকে গত প্রায় ১ মাস ধরে ওভারলোড কন্ট্রোল স্কেল বা ওয়ে স্কেল চালু না থাকায় নির্বিঘ্নে ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে দুটি সেতু হুমকির মুখে পড়েছে।<br /> ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার দাউদকান্দি টোল প্লাজায় ২০১১ সালের ১৭ ডিসেম্বর ওয়ে স্কেল বা ওভারলোড কন্ট্রোল স্টেশন স্থাপন করা হয়। পরে মেঘনা-গোমতী ও মেঘনা ব্রিজের টোল আদায়ের দায়িত্ব পায় এশিয়ান ট্রাফিক টেকনোলজিস্ট নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত ৩০ সেপ্টেম্বর ওই প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় টোল আদায়ের দায়িত্ব নেয় নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এরপর থেকে ওভারলোড কন্ট্রোল স্কেল ও কম্পিউটার কন্ট্রোল রুম বন্ধ থাকা, মনগড়াভাবে অতিরিক্ত টোল আদায়সহ নানা অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। দুটি টোল প্লাজায় নির্ধারিত টোলের তালিকা মানা হচ্ছে না। অতিরিক্ত টোল আদায় নিয়ে বাস, ট্রাক, কন্টেইনার ক্যারিয়ারসহ অন্যান্য পরিবহনের শ্রমিকদের সাথে বাকবিতন্ডা চলে আসছে।<br /> মনির হোসেন, আবাদ মিয়াসহ যানবাহনের কয়েকজন চালক ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, টোল আদায়ের নামে এ দুটি ব্রিজ ঘিরে চলছে হরিলুট। তারা জানান, কন্টেইনার ক্যারিয়ারে ১২৫০ টাকার স্থলে ১৫-১৬শ’ টাকা, হেভি ট্রাক ৫শ’ টাকার স্থলে ৭-৮শ’ টাকা, মিডিয়াম ট্রাক ১৯০ টাকার স্থলে ৪-৫শ’ টাকা, বড় বাস ৪৫০ টাকার স্থলে ৫-৬শ’ টাকা, মিনি ট্রাক ৯০ টাকার স্থলে ১৫০-২০০ টাকা, মিনিবাস ১৮৫ টাকার স্থলে ২০০ টাকা, মাইক্রোবাস ৯০ টাকার স্থলে ১০০ টাকা, কখনও রশিদে কখনও বিনা রশিদে আদায় করছে। এছাড়া ওভারলোড কন্ট্রোল স্কেল বন্ধ থাকায় দুটি টোল প্লাজার দায়িত্বপ্রাপ্ত সিএনএসের লোকজন নিজেদের ইচ্ছেমত অতিরিক্ত টোল আদায় করছে।<br /> গত দু’বছর আগে ৪৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে মেরামত করা হলেও ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে ওই দু’টি সেতু ফের হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়া টোল প্লাজায় ফেয়ার বোর্ড নেটওয়ার্কিং সিস্টেম, এলবি অটো ব্রেকার বন্ধ রেখে টোল আদায়ের কারণে সঠিক হিসাব সংরক্ষণ করা হচ্ছে না এমন অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে। নারায়ণগঞ্জ সওজ বিভাগ দুটি সেতুর দায়িত্বে রয়েছে বলা হলেও বাস্তবে বিনা কার্যাদেশে টোল আদায় করছে সিএনএস টেকনোলজি। দুটি সেতুর টোল আদায়ের জন্য ইতিপূর্বে দরপত্র আহবান করলে এতে ইনফার্টেক কন্সট্রাকশন কোম্পানি অংশগ্রহণ করে এবং দরদাতাদের মধ্যে ওই প্রতিষ্ঠানটি প্রথম অবস্থানে থাকলেও তাদেরকে টোল আদায়ের কার্যাদেশ দেয়া হয়নি।<br /> সিএনএস টেকনোলজি কোম্পানি অবৈধভাবে টোল আদায় করার প্রতিবাদে গত ১৯ অক্টোবর ইনফার্টেক কন্সট্রাকশন কোম্পানি ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করে। এ বিষয়ে দাউদকান্দি ও মেঘনা দুটি টোল প্লাজার দায়িত্বপ্রাপ্ত সিএনএস কর্মকর্তা মেজর (অব.) আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে জনবল সরবরাহ করে সার্বিক সহায়তা করছি। টোল আদায়ের কার্যাদেশের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে ওভারলোড কন্ট্রোলসহ কিছু সমস্যা রয়েছে, সহসাই এসব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এসব বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী সামসুদ্দিন বলেন, কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণ কক্ষ এবং ওভারলোড নিয়ন্ত্রণ স্কেল বন্ধ থাকার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।</p>
Discussion about this post