আসন্ন ঢাকা আইনজীবী সমিতির ২০১৭-১৮ নির্বাচন ঘিরে আদালত প্রাঙ্গন সরগরম হয়ে উঠেছে। তবে এবারের নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণায় লেগেছে ডিজিটাল ছোঁয়া। পূর্বের নির্বাচনের মত আইনজীবীরা দল বেঁধে আত্মপক্ষ সমর্থনে মিছিল বা স্লোগান দিচ্ছেন না। প্রার্থি ও নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনের জন্য মনোনীতদের পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। বিশ মিনিট অন্তর অন্তর প্রার্থীদের নাম, ছবি ও ব্যালট নাম্বার ভেসে উঠছে প্রোজেক্টরের পর্দায়। এছাড়া ২১ সদস্যের নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বপালন যারা করছেন তাদের ছবিসহ পরিচয়ও প্রোজেক্টরের পর্দায় দৃশ্যমান। নতুনত্ব আছে আরও, প্রথমবারের মত তৈরি করা হয়েছে রঙ্গিন ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা। এছাড়া যে সকল অ্যাডভোকেট প্র্যাকটিস করেন না কেবল ভোট দিতে আসেন এবং নতুন ভোটারদের সুবিধার কথা চিন্তা করে ব্যালট পেপারের আদলে প্রোজেক্টরের স্ক্রিন প্রিন্টের ব্যানার দেখানো হচ্ছে।
নির্বাচন উপলক্ষ্যে ব্যতিক্রম ধর্মী প্রস্তুতি তথা অভিনব উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের সদস্য অ্যাডভোকেট সালমা হাই টুনি ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে জানান, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থীরা নির্দিষ্ট সংখ্যক অর্থাৎ ৩০ জন করে প্রচারণাকর্মী পাচ্ছেন। যাদেরকে কমিশন থেকে প্রার্থির ছবিযুক্ত আইডি কার্ড সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়া এবার ভোট জালিয়াতি বন্ধে রঙ্গিন ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা তৈরি করা হয়েছে।
ঢাকা বারে এবারের নির্বাচনে মিছিল, মিটিং বা স্লোগানের সুযোগ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ছবিযুক্ত আইডি কার্ডধারী প্রচারকর্মীরা আইনজীবীদের চেম্বারে চেম্বারে গিয়ে ভোট চাওয়া ছাড়া বিকল্প সুযোগ নেই। নির্বাচনের আচরণবিধিতে রঙ্গিন পোষ্টার, ফেস্টুন ও মাল্টি কালারের কার্ডের মাধ্যমে প্রচারণা নিষিদ্ধ করা করা হয়েছে।
আচরণবিধিতে নির্বাচনের আগে ঢাকা বারে ক্যাম্পেইন, বনভোজন, নবীন বরণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফলে ঢাকা বারের ইতিহাসে সবচেয়ে শোরগোলহীন, শৃঙ্খলিত নির্বাচন হতে যাচ্ছে এবার।
দুই দিনব্যাপী এই নির্বাচন আগামী ২২ ও ২৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে আইনজীবীদের বড় দুটি সংগঠন সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য পরিষদ থেকে মনোনীত প্রার্থিরা আচরণবিধি মেনে প্রচার-প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন।
সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ থেকে সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান হাওলাদার ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বারের বর্তমান সম্পাদক অ্যাডভোকেট আয়ুবুর রহমান।
এছাড়া সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট কাজি শাহানারা ইয়াসমিন, সহ-সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট মঞ্জুর আলম (মঞ্জু), ট্রেজারার পদে অ্যাডভোকেট হাসিবুর রহমান দিদার, সিনিয়র সহ সাধারণ সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার (দিপু),সহ সাধারণ সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট মোঃ কামাল হোসেন পাটোয়ারী, লাইব্রেরী সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট এম. মনিরুজ্জামান, সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট আফরোজা আহমেদ (অরেঞ্জ), অফিস সেক্রেটারি পদে অ্যাডভোকেট আব্দুর রশিদ, স্পোর্টস সেক্রেটারি পদে অ্যাডভোকেট সাদিয়া আফরিন (শিল্পী) এবং সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সেক্রেটারি পদে অ্যাডভোকেট প্রহ্লাদ চন্দ্র সাহা (পলাশ) নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
অন্যদিকে, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য পরিষদ থেকে সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট মোঃ খোরশেদ আলম ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন অ্যাডভোকেট মোঃ আজিজুল ইসলাম খান (বাচ্চু)।
এছাড়া সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট মোঃ রুহুল আমিন, সহ-সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট কাজি মোঃ আবদুল বারিক, ট্রেজারার পদে অ্যাডভোকেট মোঃ লুতফর রহমান আজাদ, সিনিয়র সহ সাধারণ সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট সৈয়দ নজরুল ইসলাম,সহ সাধারণ সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট মোঃ সারোয়ার কায়সার রাহাত, লাইব্রেরী সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট মোঃ আবুল কালাম আজাদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট শাহনাজ বেগম শিরীন, অফিস সেক্রেটারি পদে অ্যাডভোকেট মোঃ আফানুর রহমান রুবেল, স্পোর্টস সেক্রেটারি পদে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম কাইয়ুম এবং সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সেক্রেটারি পদে অ্যাডভোকেট এম এ বি এম খায়রুল ইসলাম লিটন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
সমন্বয় পরিষদের সদস্য পদে মনোনীতরা হচ্ছেন, অ্যাডভোকেট মাহামুদুল হাসান, অ্যাডভোকেট মোঃ আল-আমিন সরকার, অ্যাডভোকেট মোঃ খোরশেদ আলম (পারভেজ),অ্যাডভোকেট মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান (সুজন),অ্যাডভোকেট মির্জা মোঃ জামাল হোসেন, অ্যাডভোকেট মোঃ খায়রুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মোঃ মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, অ্যাডভোকেট মোঃ সাইফুজ্জামান টিপু, অ্যাডভোকেট মোঃ আহসান হাবিব, অ্যাডভোকেট সাবিনা আক্তার, অ্যাডভোকেট সাদিয়া আফরোজ, অ্যাডভোকেট শেখ সাইফুর রহমান, অ্যাডভোকেট সঞ্জয় চক্রবর্তী, অ্যাডভোকেট সুমন মিয়া, এবং অ্যাডভোকেট ওয়ায়েস আহমেদ (কায়েস)।
অপরদিকে, ঐক্য পরিষদের সদস্য পদে মনোনীতরা হচ্ছেন, অ্যাডভোকেট আবু হেনা কাউসার, অ্যাডভোকেট মোঃ আনোয়ার পারভেজ, অ্যাডভোকেট মোঃ আরিফ হোসেন তালুকদার, অ্যাডভোকেট মোঃ শহিদুল্লাহ, অ্যাডভোকেট মোঃ শাহিন হোসেন, অ্যাডভোকেট শওকত উল্লাহ্, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আবুল কাশেম, অ্যাডভোকেট মোস্তফা সরোয়ার, অ্যাডভোকেট মোস্তারি আক্তার, অ্যাডভোকেট মিনারা বেগম, অ্যাডভোকেট জেবুন্নেসা খানম, অ্যাডভোকেট পান্না চৌধুরী, অ্যাডভোকেট সাহানাজ পারভিন, অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোহাম্মদ মনিরুল হোসেন এবং তামান্না খানম আইরিন।
Discussion about this post