বিডি ল নিউজ: সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের এক পর্যায়ে গত ৯ এপ্রিল রাতে মুখোশধারী যুবকরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এ ঘটনায় পরদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র সিকিউরিটি অফিসার এস এম কামরুল আহ্সান বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলা করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৯ এপ্রিল অজ্ঞাতপরিচয় মুখোশধারী সন্ত্রাসী ও দুষ্কৃতকারীরা লোহার রড, পাইপ, হ্যামার, লাঠি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের বাসভবনে হামলা চালায়। তারা সীমানা দেয়াল টপকে এবং ভবনের মূল ফটকের তালা ভেঙে ভবনের ভেতরে ঢোকে। এ সময় বাসভবনে মূল্যবান জিনিসপত্র, আসবাব, ফ্রিজ, টিভি, লাইট, কমোড ও বেসিনসহ অনেক মালপত্র ভাঙচুর করা হয়। লুটও করা হয়। এ ছাড়া ভবনে রাখা দুটি গাড়ি পুড়িয়ে দেয় এবং আরো দুটি গাড়ি ভাঙচুর করে। এ ছাড়া ভবনের সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো ভেঙে ফেলে এবং সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ থাকা ডিভিআরগুলো আগুনে পুড়িয়ে নষ্ট করে ফেলে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ধরে নেওয়া হয় আমাদের দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ। সেই বিদ্যাপীঠের প্রধান উপাচার্যের বাসভবনে তারই প্রতিষ্ঠানের ছেলে মেয়েরা হামলা চালাতে পারে এটা কোন মতেই বিশ্বাস হচ্ছিল না অনেকের। অবশেষে তার প্রমাণ মিলল, কোটাব্যবস্থা সংস্কার দাবির আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলার ঘটনায় বহিরাগত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রবিবার দুপুর ১টার দিকে রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
তাদের কাছ থেকে উপাচার্যের বাসভবন থেকে চুরি যাওয়া দুটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো রাকিবুল হাসান ওরফে রাকিব (২৬), মাসুদ আলম ওরফে মাসুদ (২৫), আলী হোসেন শেষ ওরফে আলী (২৮) ও আবু সাইদ ফজলে রাব্বী ওরফে সিয়াম (২০)। গতকালই আদালতের মাধ্যমে তাদের একজনকে চার দিন, একজনকে দুই দিন এবং দুজনকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ওই চারজনের কেউই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নয়। এর মধ্যে মাসুদ আলম ঢাকা আলিয়া মাদরাসার ছাত্র। বাকি তিনজন কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেরই ছাত্র নয়। আর রাকিবের নামে বরিশাল ও লক্ষ্মীপুরে পাঁচটি মামলা রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম শাখার উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান বলেন, ‘গত ১০ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র সিকিউরিটি অফিসার এস এম কামরুল আহ্সানের দায়ের করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ’
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, উপাচার্যের বাসভবন থেকে দুটি মোবাইল ফোন খোয়া গিয়েছিল। সেই মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই চারজনকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। তবে তারা কার নির্দেশে উপাচার্যের বাসভবনে হা তাদের কোন রাজনৈতিক দল বা জঙ্গিসংশ্লিষ্টতা আছে কি না তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
Discussion about this post