রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার জামায়াতের ২৮ নারী সদস্যের মধ্যে কেউ কেউ সঠিক পরিচয় দিলেও অনেকে তথ্য গোপন করার চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। ভুল ঠিকানা ও পরিচয় দিয়ে পুলিশকে বিভ্রান্ত করছেন তারা।
এদিকে গ্রেফতার নারীদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দ্বিতীয় দফায় আরও একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
এর আগে ২ ফেব্রুয়ারি দুপুর দেড়টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর তাজমহল রোডের ১১/৭ নম্বর বাড়ি থেকে গোপন বৈঠক করার সময় তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। ৩ ফেব্রুয়ারি দুপুরে আসামিদের আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত প্রত্যেকের ২ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও মোহম্মদপুর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম বলেন, দু’দিনের রিমান্ডেও আসামিরা তাদের সঠিক পরিচয় দেননি। তথ্য গোপন করার চেষ্টা করছেন। তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবার ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হলে তাদের প্রত্যেককে একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শরিফুল ইসলাম বলেন, আসামিদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমরা স্থানীয় ঠিকানা ও নামের ভেরিফিকেশন করছি। কিন্তু মিলছে না। এদিকে, অনেকেই নিজের নাম ঠিক বললেও স্বামীর নাম অর্ধেক বলছে, ঠিকানার ক্ষেত্রে এলাকা ঠিক বলে বাড়ি ও রাস্তার নম্বর গোপন রাখছে। গ্রেফতার ২৮ নারীর মধ্যে একজন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের ছোট ভাই আলী আকরামের স্ত্রী।
এজাহার মোতাবেক তার নাম সাকিনা তাসকিন (৪৭)। তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগের রোকন পর্যায়ের কর্মী।
পুলিশ বলছে, তার স্বামীর নাম আলী আকরাম ও পিতা মৃত হুমায়ন মাকসুদ। গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের মওলানা আ. আলী রোড। বর্তমান ঠিকানা, আদাবর থানা এলাকার ৬ নম্বর রোডের আলিফ হাউজিংয়ে।
সাংগঠনিক কাজ পরিচালনার জন্য জামায়াতের এসব নারী কর্মী বিভিন্ন সময় ছদ্মনাম ও সাংগঠনিক নাম ব্যবহার করেন বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
তদন্তের সঙ্গে যুক্ত এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতার ২৮ নারী জামায়াতকর্মীর কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া বুকলেট ও বিভিন্ন নথি পর্যালোচনা করে জানা যায়, তারা তাবলিগের নাম করে নারীদের উগ্রবাদী দীক্ষা দেওয়ার কাজ করতেন। তারা কর্মী জোগাড় করতে বিভিন্ন এলাকার নারীদের টার্গেট করে কাজ করছিলেন। এসব বৈঠকে যাদের কথিত দাওয়াত দেওয়া হয়, তাদের নাম ও তথ্য সংরক্ষণ করে রাখা হতো।
এদিকে নতুন নারীদের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কেও আলাদা ডায়েরিতে লিখে রাখা হতো। উদ্ধার করা বুকলেটগুলোতে পাওয়া এমন আরও ২৫০ নারীর বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।
তাজমহল রোড থেকে ১১ নম্বর লেনে প্রবেশের পর ঠিক দু’টি বাড়ির পরেই ১১/৭ নম্বর বাড়িটির অবস্থান। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের সবুজরঙা দোতলা বাড়িটি পিডব্লিউডির সাবেক কর্মকর্তা এ কে এম জয়নাল আবেদিনকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিলো।
Discussion about this post