কুমিল্লার সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর লাশের প্রথম ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসককে আবারো জিজ্ঞাসাবাদে করা হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেল ৫টার পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কুমিল্লা দপ্তরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
প্রথম ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক হলেন- কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক শারমিন সুলতানা।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার ও তদন্ত সহায়ক দলের প্রধান আবদুল কাহার আকন্দ ছাড়াও জিজ্ঞাসাবাদের সময় উপস্থিত ছিলেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার নাজমুল করিম খান ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক গাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম।
এর আগে দুপুরে আবদুল কাহার আকন্দের নেতৃত্বে সিআইডির একটি টিম কুমিল্লার ময়নামতি সেনানিবাস এলাকায় নিহত তনুর বাসায় যায়। তারা তনুর বাবা ইয়ার হোসেন ও মা আনোয়ারা বেগমের সঙ্গে কথা বলেন।
ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড গেস্ট হাউজে বসে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গেও কথা বলে সিআইডির প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সিআইডির কুমিল্লা-নোয়াখালী অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করিম খান জানান, ‘সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে সেনানিবাসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। মামলার বিষয়ে নানা তথ্য সংগ্রহসহ করা হয়েছে কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদও। করা হয়েছে।
এর আগেও ১০ এপ্রিল বিকেলে কুমিল্লা সিআইডি কার্যালয়ে তনু হত্যাকাণ্ডের প্রথম ময়না তদন্তকারী দুই চিকিৎসককে ঘণ্টাব্যাপী জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। সে সময় ডা. শারমিন সুলতানার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. কামদা প্রসাদ সাহা।
ওইদিনই কুমিল্লা পরিদর্শন করেছিলেন সিআইডির ডিআইজি (ক্রাইম-ইস্ট) মাহবুব মোহসিনসহ উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। তারা কুমিল্লা সিআইডি কার্যালয়ে তনু হত্যা মামলার বিষয়ে বৈঠক, ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও তনুর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখাও করেছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকার একটি জঙ্গল থেকে তনুর মৃতদেহ পাওয়া যায়। তাকে হত্যা করে মৃতদেহ ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় পরদিন তনুর বাবা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
৩১ মার্চ সন্ধ্যায় জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) থেকে মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে মামলাটি তারাই তদন্ত করছে।
প্রাথমিকভাবে পুলিশ ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে অনুমান করলেও তনুর প্রথম ময়নাতদন্ত রিপোর্টে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি বলে দাবি করা হয়। ঠিক কী কারণে তার মৃত্যু হয়েছে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট করে কিছু না বলায় প্রতিবেদন নিয়েও সমালোচনা হয়।
অবশ্য ৩০ মার্চ দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে মরদেহ তুলে নমুনা নেয়া হয়। তদন্ত কর্মকর্তারা সেই প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন।
এ ঘটনা তদন্তে র্যাব ও পুলিশসহ একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা মাঠে নামে। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে সারাদেশে চলে বিক্ষোভও। তবে হত্যাকাণ্ডের কিছুদিন পরে সেনা সদর দপ্তর থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, তারাও তনুর ঘটনায় অত্যন্ত মর্মাহত। এ ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্তদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করারও আশ্বাস দেয়া হয়।
Discussion about this post