কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী সোহাগী জাহান তনুকে যারা হত্যা করেছে, তারা আগে থেকেই তাকে অনুসরণ করত। পরিচিত ছিল বলেই তারা তনুকে ‘ধর্ষণের’ পর নিমর্মভাবে হত্যা করেছে। হত্যাকারীরা কৌশলে আলামত নষ্ট এবং পরিবর্তনের চেষ্টাও করেছে। আলামত বিশ্লেষণ করে তদন্তকারী ও ছায়া তদন্তকারী সংস্থার কর্মকর্তারা এমনই ধারণা করছেন।
প্রাথমিক তদন্তে তনুকে উত্ত্যক্ত করার তথ্যও পাওয়া গেছে। তনুকে হত্যার আর কোনো কারণ খুঁজে পায়নি তদন্তকারীরা। তাই দেশব্যাপী চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে তনুর উত্ত্যক্তকারীকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি তনুর সঙ্গে ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় কার কার যোগাযোগ ছিল তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বুধবার (৩০ মার্চ) একাধিক সূত্র এসব তথ্য জানায়।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তনুর লাশ উদ্ধারের পর সংগৃহিত আলামতে অনেক বিষয় অস্পষ্ট রয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদনও ছিল দায়সারা। এ কারণে বুধবার লাশ উত্তোলন করে দ্বিতীয় দফায় ময়নাতদন্তের সঙ্গে নতুন করে আলামত সংগ্রহ শুরু করেছে তদন্তকারীরা।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ঘটনার আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করলেও বুধবার পর্যন্ত তাদের হাতে মামলার নথিপত্র পৌঁছায়নি।
বহুল আলোচিত এই মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কুমিল্লা সিআইডির পরিদর্শক গাজী মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে। সিআইডি নিজস্ব তদন্তের পাশাপাশি ছায়া তদন্তকারী সংস্থাগুলোর কাছ থেকেও তথ্য সংগ্রহ করছে। বুধবার পর্যন্ত এক ডজন আলামত সংগ্রহ করে সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
সিআইডির কুমিল্লা-নোয়াখালী অঞ্চলের বিশেষ সুপার (এসএস) ড. মো. নাজমুল করীম খান বলেন, ‘আমরা এখনো আলামত সংগ্রহ করছি। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারকৃত মোবাইল ফোনসহ কয়েকটি আলামত ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। অন্য সংস্থাগুলোর কাছ থেকেও আমরা সহায়তা নিচ্ছি। আমরা সব সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে চাই।’
ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় যেখানে তনু গেছেন বা তার যাতায়াতের স্থানগুলোতে আলামত সংগ্রহ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে এসএস ড. মো. নাজমুল করীম খান বলেন, ‘এটা নিয়ে সমস্যা নাই। আমরা সহায়তা পাচ্ছি। আগে ছায়া তদন্তকারী হিসেবে আমরা কাজ করতে পেরেছি। এবার তদন্তকারী হিসেবে আরো কাজ করব।’
একাধিক সূত্র জানায়, প্রাথমিক তদন্তে তনুর উত্ত্যক্তকারী খোঁজা হয়েছে। পরিবার শুধু পিয়াল নামে এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের নাম জানাতে পেরেছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ডিবি পুলিশ। তবে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়নি।
Discussion about this post