সীমান্ত পর্যবেক্ষণের জন্য বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তমব্রু সীমান্তে তিনটি ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা লাগিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। শুক্রবার (২ মার্চ) এই সিসি ক্যামেরাগুলো লাগানো হয়। এর আগে সীমান্তে কোনও সিসি ক্যামেরা ছিল না।
৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সীমান্তে অতিরিক্ত বিজিবি মোতায়েন করা না হলেও বিজিবি সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
মিয়ানমার গতকাল বৃহস্পতিবার (১ মার্চ) সীমান্তে অতিরিক্ত সৈন্য মোতায়েন করলে সীমান্তে উত্তেজনা তৈরি হয়। পরে অতিরিক্ত সৈন্য সরিয়ে নেওয়া হলেও পরিস্থিতি এখনও থমথমে রয়েছে। এ পরিস্থিতিতেই সীমান্তে সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছে বিজিবি।
এদিকে, সীমান্তে অতিরিক্ত সৈন্য সমাবেশ করার প্রতিবাদ জানিয়েছে বিজিবি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত লুইন উ’কে তলব করে একটি নোট ভারবাল বা আনুষ্ঠানিক পত্রও দেওয়া হয়। বিজিবির পক্ষ থেকে মিয়ানমারকে পতাকা বৈঠকে বসার আহ্বান জানানো হয়। এর আগে একাধিকার মিয়ানমার পতাকা বৈঠকে বসতে রাজি না হলেও এবারে তারা পতাকা বৈঠকে বসতে রাজি হয়েছে। কক্সবাজার বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল আব্দুল খালেক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শুক্রবার সকালে তমব্রু সীমান্তে ‘নো-ম্যানস ল্যান্ড’ এলাকা পরিদর্শন করেছেন বান্দরবান জেলা প্রশাসক দিলিপ কুমার বণিক, ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যাস্ট কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান, বান্দরবান লামা উপজেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুস সালাম, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এন সরয়ার কামালসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।
পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক দীলিপ কুমারও বলেন, ‘বিজিবির পক্ষ থেকে মিয়ানমারকে পতাকা বৈঠকের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। আজ বিকাল ৩টায় বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।’
একটি সূত্র জানায়, রাখাইনে সামরিক শক্তি বাড়ালে নো-ম্যানস ল্যান্ডে যে ছয় হাজার রোহিঙ্গা আছে তারা মিয়ানমারে ফেরত যেতে আগ্রহী হবে না এবং রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর পুরো প্রক্রিয়াটি অনিশ্চিত হয়ে যেতে পারে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের রাখাইনে সে দেশের সেনাবাহিনী নিপীড়ন ও গণহত্যা চালানো শুরু করলে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশে প্রবেশ করে। তাদের অস্থায়ীভাবে আশ্রয় ও মানবিক সহায়তা দিলেও নিজেদের দেশে ফেরত পাঠাতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা আহ্বানসহ দ্বিপক্ষীয় কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে সরকার।
Discussion about this post