[responsivevoice_button voice=”Bangla India Female” buttontext=”Listen to Post”]
নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কোনো কোনো বিচারপ্রার্থী নির্ধারিত সময়ে আদালতে মামলা বা আবেদন করতে পারেননি। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে মামলা করার নির্ধারিত সময়সীমাও পেরিয়ে গেছে। এমন ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এখন আদালতে মামলা বা আবেদন করার সুযোগ পাচ্ছেন। এ জন্য ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সময় বাড়িয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার (০৬ আগস্ট) এক মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
আদেশে বলা হয়, সংবিধানের ১০৪ অনুচ্ছেদে বর্ণিত ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব বলে সাধারণ বা বিশেষ আইনের অধীনে দেওয়ানি/ফৌজদারি বা প্রশাসনিক বিষয়ে আবেদন/পিটিশন/মামলা/আপিল/রিভিশন/অন্যান্য যেসব আইনি প্রক্রিয়া দায়েরের মেয়াদ ২৬ মার্চ বা এরপর শেষ (তামাদি) হয়ে গেছে, সেই মেয়াদ ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হলো।
সম্পূর্ণ ন্যায়বিচারের স্বার্থে এ আদেশ দেওয়া হলো, যা সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ অনুসারে সব আদালত/ট্রাইব্যুনালের জন্য বাধ্যতামূলক। বিচারপ্রার্থী জনগণ আবেদন/পিটিশন/মামলা/আপিল/রিভিশানসহ ইত্যাদি দায়ের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে এবং হচ্ছেন বলেও আদেশে বলা হয়।
‘ফজলুল হক সরদার এবং অন্যান্য বনাম গ্রামীণফোন লিমিটেড এবং অন্যান্য’ শিরোনামে দেওয়ানি আপিল আজ আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় শুনানির জন্য ওঠে। এর শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম উল্লেখ করেন, কোভিড-১৯ (করোনা ভাইরাস) প্রভাবের কারণে দেশের বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, এমন অসংখ্য মামলা আছে, যেখানে বিশেষ মেয়াদ রয়েছে। শারীরিকভাবে উপস্থিত হয়ে প্রতিকার চাইতে পক্ষগুলোর আদালতে গিয়ে কোনো মামলা করা সম্ভব হচ্ছে না। করোনার কঠিন পরিস্থিতির জনমনে ভীতির সঞ্চার করছে।
নিম্ন আদালত ৫ আগস্ট থেকে খুলেছে উল্লেখ করে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, কিন্তু আবার যে লকডাউনের প্রয়োজন হবে না, এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। কেননা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এমনটি ঘটে চলছে। তামাদির মেয়াদ বাড়ানো সংক্রান্ত ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের আদেশের প্রসঙ্গ টেনে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এ বিষয়ে আমাদের এমন সুরক্ষা প্রয়োজন।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন একই মত প্রকাশ করেন। তাঁদের বক্তব্য সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফ ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম কামরুল হক সিদ্দিকীসহ সমিতির অন্যান্য জ্যেষ্ঠ সদস্যরা সমর্থন করেন বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়। উত্থাপিত বিষয়টি যুক্তরাজ্য, ইতালি, স্পেন, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ভারত ও শ্রীলঙ্কা যেভাবে মোকাবিলা করেছে, সে বিষয়ক বিস্তারিত তথ্যাদি দেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা।
পরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘চার মাসের বেশি সময় ধরে শারীরিক উপস্থিতিতে আদালতে বিচারকাজ বন্ধ রয়েছে। সাধারণ ও বিশেষ আইনে মামলা দায়ের জন্য নির্ধারিত সময়সীমা রয়েছে। বিশেষ আইনের মামলার ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলে তামাদি খণ্ডন করে মামলা করার সুযোগ থাকে। আপিল বিভাগের আদেশের ফলে বিশেষ এই সময়ে অর্থাৎ ২৬ মার্চ বা তারপরে তামাদি হওয়া সব ধরনের মামলা/আবেদন ৩১ আগস্ট পর্যন্ত দায়েরের সুযোগ থাকছে। এতে বিচারপ্রার্থী জনগণের দুর্ভোগ লাগব হবে। আপিল বিভাগের এই সিদ্ধান্ত ঐতিহাসিক। কেননা জনস্বার্থ বিবেচনায় সংবিধানের ১০৪ অনুচ্ছেদের ক্ষমতা বলে আপিল বিভাগ ওই আদেশ দিয়েছেন।’
Discussion about this post