কুবি প্রতিনিধি, বিডি ল নিউজঃ
মাত্র একদিন পরপালিত হবে মহান একুশে ফেব্রুয়ারি ও আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস। ভাষার জন্য জীবন দানকারী জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণে নির্মিত শহীদ মিনারে ফুল দানের মাধ্যমে শ্রদ্ধাভরে জাতি তাদের স্মরণ করবে। তবে প্রতি বছরের মত এবারও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার অসম্পন্ন শহীদ বেদীতেই পুষ্পার্ঘ্য অপর্ণের মধ্য দিয়েই পালন করবে এ দিবসটি। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই শহীদ মিনার নির্মাণের
দাবি জানিয়ে আন্দোলন করে আসছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থী ও কর্মচারীবৃন্দ। দীর্ঘ নয় বছরেও শহীদ মিনার নির্মিত না হওয়ায় এ
নিয়ে যেন ক্ষোভের অন্ত নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে। তবে বাজেট স্বল্পতার জন্যই কাজ সম্পর্ণ হয়নি বলে জানান নির্মাণ
কাজে নিয়োজিত সংশ্রিষ্টরা। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবির প্রেক্ষিতে ২০০৮ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম ভিসি প্রফেসর ড. গোলাম মাওলা সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ লাগোয়া টিলার উপর মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী প্রস্তাবিত শহীদ মিনারের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। নয়নাভিরাম ঐ স্থানটিকে ঘিরে ৭০ লক্ষ টাকা ব্যয় ধরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নান্দনিক নকশা তৈরি করেছিলেন প্রখ্যাত চিত্র শিল্পী প্রফেসর ড. হাসেম খান। ভিত্তি প্রস্তর স্থাপিত স্থানটিতে তৈরি নকশার অনুকরণে ডামি শহীদ মিনার তৈরি করে ২১ শে ফেব্রুয়ারিসহ সকল জাতীয় দিবসে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হত। পটপরিবর্তনে দু’দফা ভিসি পরিবর্তনের ফলে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল শহীদ মিনারের নির্মাণ কাজ। শহীদ মিনারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের ৩য় দফা আন্দোলনের মুখে তৎকালীন ভিসি প্রফেসর ড. আমীর হোসেন খান ২০১১ সালে স্থান পরিবর্তন করে বিশ্ববিদ্যাললেয় মুল ফটক থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে খেলার মাঠ লাগোয়া পাহাড়ে শহীদ মিনার নিমার্ণের সিদ্ধান্ত নেন। কাজ শুরু করে দশ লক্ষ টাকার কাজ
হলে বাজেট স্বপ্লতা দেখালে ডিমেতালে চলতে থাকে শহীদ মিনানের নির্মান কাজ। এক পর্যায়ে ভিসি ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের স্বদিচ্ছা ও
আন্তরিকতার অভাবে মুখথুবড়ে পড়ে শহীদ মিনার নির্মাণ কাজ। বর্তমান ভিসি প্রফেসর ড. মোঃ আলী আশরাফ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার জন্য টেন্ডার আহ্বান করেন। ২৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার জন্য মেসার্স আহসান হাবীব ও মের্সাস সেলিনা ইন্টারন্যাশনাল নামক দু’টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে যথাক্রমে ৪৫লক্ষ ও ২০ লক্ষ টাকার কাজ দেওয়া হয়। শহীদ মিনারের বেদী, মাটি কাটা, সৌন্দর্য্য বর্ধন, সংলগ্ন রাস্তা নির্মানসহ সম্পর্ণ কাজের জন্য এই বাজেট দেয়া হয়।
ব্যয়ের দিক থেকে বিবেচনা করলে শহীদ মিনারের এখনও প্রায় ৮০ ভাগ কাজ বাকি রয়েছে বলে প্রকৌশল দপ্তর থেকে জানা যায়। এই প্রসঙ্গে ভিসি প্রফেসর ড. মোঃ আলী আশরাফ বলেন, শহীদ মিনারের অসম্পূর্ণ কাজ সম্পন্ন করার জন্য ইতিমধ্যে টেন্ডারের
মাধ্যমে কাজের আদেশ দেয়া হয়েছে। শীঘ্যই তারা কাজ শুরু করবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি নান্দনিক শহীদ মিনার নির্মিত হবে।
Discussion about this post