পুলিশ ধরে নেয়ার পর থানা থেকে নিখোঁজ সাতক্ষীরার মোখলেসুর রহমান জনিকে খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে চার সপ্তাহের মধ্যে তাকে খুঁজে বের করে বিচারিক আদালতে হাজির করার নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।
নিখোঁজ মোখলেসুর রহমান জনির স্ত্রী জেসমিন জাহানের করা রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে জারি করা রুলের ওপর শুনানিতে আজ রোববার (১৯ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি রেজা-উল হক ও বিচারপতি মুহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এ বিষয়ে আগামী এক মাসের মধ্যে সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার (এসপি) ও সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আদালতে দেয়া আদেশের বিষয়টি ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস নিশ্চিত করেছেন।
আদালতে আজ রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম মতিউর রহমান। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।
আইনজীবী এম মতিউর রহমান মতিন সাংবাদিকদের জানান, রিট আবেদনে বলা হয়- ২০১৬ সালের ৪ আগস্ট সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশ মোখলেসুরকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর ৫-৭ আগস্ট জেসমিন থানায় গিয়ে স্বামীর সঙ্গে দেখা করে খাবার দিয়ে আসেন। ৮ আগস্ট থানায় গেলে আর স্বামীর দেখা পাননি এবং থানা থেকে জানানো হয়, এই নামে থানায় কেউ ছিল না এবং নেই।
বিষয়টি নিয়ে প্রথমে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে চাইলে তা গ্রহণ করেনি। পরে মোখলেসুর রহমানের স্ত্রী ২৪ আগস্ট পুলিশ সুপারকে অবহিত করেন। তারপরও এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি পুলিশ। পরে জেসমিন জাহান তার স্বামীকে ফিরে পেতে হাইকোর্টের নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদন করেন।
গত ৬ মার্চ ওই রিটের শুনানিতে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপারের ব্যাখা চান হাইকোর্ট, সঙ্গে রুলও জারি করেন। রুলে মোখলেসুর রহমানকে কেন খুঁজে বের করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। একইসঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা ও নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ও বে-আইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়।
আজ ছিল ওই ব্যাখ্যা দাখিলের নির্ধারিত দিন। নির্দেশনা অনুযায়ী পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে আদালতে ব্যাখ্যা হাজির করা হয়। ব্যাখ্যায় বলা হয়, নিখোঁজ মোখলেসুর রহমান নিষিদ্ধ সংগঠন ‘আল্লাহর দল’ এর সঙ্গে যুক্ত এবং তাকে গ্রেফতার করা হয়নি। ব্যাখ্যা শোনার পর আদালত আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে মোখলেসুরকে খুঁজ বের করতে সময় বেঁধে দেন।
আবেদনকারীর আইনজীবী এম মতিউর রহমান মতিন সাংবাদিকদের জানান, পুলিশ সুপার কোনো খোঁজ না দেয়ায় ২৬ ডিসেম্বর তারা থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে যান। তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদ শেখ জিডি নিতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেন। আদালত পুলিশ সুপারকে ব্যাখ্যা দিতে বলায় আজ তিনি ব্যাখ্যা হাজির করেন।
Discussion about this post