ডেস্ক রিপোর্ট
যশোর কারাগারে দুই আসামির ফাঁসি কার্যকরে আইনের কোনো ব্যত্যয় হয়নি বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন।
‘চুয়াডাঙ্গার একটি হত্যা মামলায় দুই আসামির আপিল শুনানির আগেই মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করা হয়েছে’— দুই আসামির আইনজীবীর করা এমন অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বৃহস্পতিবার (৪ অক্টোবর) নিজ কার্যালয়ে এ কথা জানান অ্যাটর্নি জেনারেল।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, সিস্টেম ডিজিটাইলেজড হলে এ সমস্যা আর থাকবে না।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, বুধবার (৩ নভেম্বর) বিষয়টি পত্রপত্রিকায় দেখলাম, আজকে সে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম, আসামি জেল থেকে যে আপিল দায়ের করেছিল তা নম্বর ছিল ০৩/২০১৬।
সে আপিলটি সাবেক বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহাসহ তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ ২০১৬ সালের ১৫ নভেম্বর খারিজ করে দেন। কিন্তু আসামিদের দায়ের করা আরেকটি আপিল যেটা বুধবার তালিকায় ছিল।
সমস্যা হয়েছে সংবিধান সংশোধনের ফলে আপিলগুলোর লিভ পিটিশন শুনানি হয় না, সরাসরি আপিল হয়। যার কারণে ওই আপিলটা পড়েছিল। কিন্তু তাদের আইনজীবীদের উচিত ছিল দুইটা আপিল এক সঙ্গে শুনানি করা, বা আদালতের দৃষ্টিতে নিয়ে আসা।
যেহেতু তারা আদালতের দৃষ্টিতে আনেননি, সেই কারণে তাদের যে জেল আপিলটা ছিল সেটা সুপ্রিমকোর্টের ফুল কোর্টে শুনানি হয়ে ডিসমিস (খারিজ) হয়। এর পর তারা প্রাণভিক্ষার আবেদন করলেন সেটাও খারিজ হয়ে গেলো। তারপর স্বাভাবিকভাবেই দণ্ড কার্যকর হলো।
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা জানান, আর এ যে আপিলটা ছিল। এটা যেহেতু আলাদা রয়েছে। এটা ট্যাগ করা হয়নি, এ কারণে রয়ে গেছে। তাদের বিচার তো হয়ে গেছে। আদালত সব কিছু শুনেই খারিজ করে গেছে।
এখানে গ্যাপ কীভাবে হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা তো অ্যানালগ সিস্টেম, ডিজিটাল হয়নি। আমি মনে করি, আইনজীবীদের দায়িত্ব ছিল, এটি আদালতের নজরে আনা যে জেল আপিলের সঙ্গে আরেকটা আপিল রয়েছে। যে ঘটনার আমরা প্রায়ই সম্মুখিন হই।
অনেক সময় দেখা যায়, জেল আপিল আসে না। তখন সাতদিন সময় দেওয়া হয়। আশা করছি, সিস্টেম ডিজিটাইলেজশন করা হচ্ছে এ সমস্যা আর থাকবে না।তিনি বলেন, পাঁচটা আপিল থাকলেও রায় তো একটাই হবে। সব দেখে শুনেই আদালত রায় দিয়েছে। ফাঁসি কার্যকরে আইনের কোনো ব্যত্যয় হয়নি। এখন ওই আপিলটি অকার্যকর হয়ে গেছে।
যশোর কারাগারে চার বছর আগে আব্দুল মোকিম ও গোলাম রসুল ঝড়ু নামে দুজনের ফাঁসি কার্যকর নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হয়। যেখানে বলা হয়, আসামিদের নিয়মিত আপিল তালিকায় থাকা অবস্থায় ফাসি কার্যকর হয়েছে। ঘটনা খুঁজে জানা যায়, জেল আপিল নিষ্পত্তি করেই আসামিরদের সাজা কার্যকর হয়েছে।
যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে ২০১৭ সালের ১৬ নভেম্বর রাতে আসামি মোকিম ও ঝড়ু দুজনের ফাঁসি দেওয়া হয়।অন্যদিকে, সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, চুয়াডাঙ্গার একটি হত্যা মামলায় দুই আসামির আপিল শুনানির আগেই মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করার অভিযোগটি সঠিক নয়।
চুয়াডাঙ্গার একটি হত্যা মামলায় ঝড়ু ও মকিম নামের দুই আসামির নিয়মিত আপিল নিষ্পত্তির আগে দণ্ড কার্যকর হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তাদের আইনজীবী। ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে করা আপিলটি শুনানির জন্য প্রস্তুত হলে আইনজীবী স্বজনদের কাছ থেকে জানতে পারেন, চার বছর আগে ২০১৭ সালেই দণ্ড কার্যকর হয়ে গেছে।
Discussion about this post